হাজীগঞ্জে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত চারজনের লাশ হস্তান্তরের উদ্যোগ

চাঁদপুর জেলার মানচিত্র
চাঁদপুর জেলার মানচিত্র

কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় নিহত চারজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ সাতজনকে আটক করেছে।

হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় চারজনের মারা যাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাজীগঞ্জ থানার ওসি মোহাম্মদ হারুনুর রশিদ। নিহত ব্যক্তিরা হলেন হাজীগঞ্জ উপজেলার বড়কুল ইউনিয়নের রায়চোঁ গ্রামের আল আমিন(১৮), রান্ধুনীমুড়া এলাকার ফজলুল হকের ছেলে ইয়াছিন হোসেন (১৫), একই এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে শামীম (১৯) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বাবলু (৩০)। তাঁদের লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

রান্ধুনীমুড়া এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে রিপন বলেন, ‘আমার ভাই শামীম ভ্যানে করে কলা বিক্রি করতে গিয়ে পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে আহত হওয়ার পর বুধবার রাত সাড়ে ১১টায় কুমিল্লা মেডিকেলে মারা যান।’

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কাউকে উদ্দেশ করে গুলি করিনি। মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের ওপর হামলার চালানো হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৩৯ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। এ ঘটনায় এএসপি সোহেল মাহমুদ, হাজীগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদসহ ২৩ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। এর মধ্যে পুলিশের আটজন সদস্য হাজীগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, কিছুক্ষণ আগে জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত ডিআইজি ইকবাল হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল রাত সোয়া ৮টায় হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল থেকে লক্ষ্মীনারায়ণ আখড়ায় ঢিল ছোড়া হয়। একপর্যায়ে মিছিলকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ গুলি চালায়। এতে চারজন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

হামলার ঘটনার পর রাত ১১টা থেকে হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। সেখানে (হাজীগঞ্জে) পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ২ প্লাটুন বিজিবি ও র‌্যাব মোতায়েন করেছি।’

হাজীগঞ্জ পৌর মেয়র মাহাবুব আলম লিপন বলেন, ‘আমি ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করি। কিন্তু সেখানে গিয়ে আমি নিজেও আহত হই। এ ঘটনাটি পরিকল্পিত ছিল বলে আমি প্রশাসনকে আগেই জানিয়েছিলাম।’