সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ২৩ ফেব্রুয়ারি খুলে দেওয়ার সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময়ের মধ্যে হল খুলে দেওয়া না হলে তাঁরা আবার আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গতকাল শনিবার রাতে তাঁরা এই ঘোষণা দেন।
হল খুলে দেওয়ার দাবিতে গতকাল শনিবার বিকেল থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে তাঁরা রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান নেন। রাত ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক মো. রাশেদ তালুকদার শিক্ষার্থীদের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে হল খুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের তালা খুলে দিয়ে তাঁদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন।
শনিবার রাতে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি শুরু হওয়ার পর গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দিয়ে সব শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে সেশনজট নিরসনের লক্ষ্যে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে অনলাইনে ক্লাস নেওয়া শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
অনলাইনে দুই সেমিস্টারের ক্লাস শেষে গত ১৭ জানুয়ারি থেকে স্নাতক (সম্মান) চূড়ান্ত বর্ষ এবং স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসে এসে তাঁরা পরীক্ষায় অংশ নেন। কিন্তু ওই পরীক্ষা শুরুর আগেই আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে কয়েক দফায় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিও দেন তাঁরা।
আবাসিক হল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের শহরের বিভিন্ন এলাকার মেসসহ ভাড়া বাসায় উঠতে হয়েছে। তবে অনেক শিক্ষার্থীর ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এ ছাড়া বাইরে ভাড়া থাকতে গিয়ে তাঁরা নানাভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, আবাসিক হল বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের শহরের বিভিন্ন এলাকার মেসসহ ভাড়া বাসায় উঠতে হয়েছে। তবে অনেক শিক্ষার্থীর ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এ ছাড়া বাইরে ভাড়া থাকতে গিয়ে তাঁরা নানাভাবে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগামী ১ মার্চ থেকে স্নাতক (সম্মান) শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক রাশেদ তালুকদারের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শুরুর এক সপ্তাহ আগে হল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘করোনা মহামারির জন্য পুরো বিশ্বেই একই অবস্থা বিরাজ করছে। আমরা শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই আগে থেকে যাঁরা পরীক্ষার্থী, তাঁদের জন্য সীমিত পরিসরে হল খুলে দেওয়ার চিন্তা করেছিলাম। এর আগেই শিক্ষার্থীরা দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। আমরা তাঁদের দাবির বিষয়ে আশ্বস্ত করেছি।’
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক রাশেদ তালুকদার বলেন, ‘আগামী ১ মার্চ থেকে কিছু পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। সে অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা ২৩ ফেব্রুয়ারি হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল এবং সিন্ডিকেটের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে হল খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আবু হেনা পহিল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী হল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মুঠোফোনে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।