রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলায় এবার হলুদের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। প্রতি কেজি কাঁচা হলুদ ১৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকেরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। এ কারণে তাঁরা বেশ খুশি।
উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ঊর্মি তাবাসসুম বলেন, হলুদ হলো লাভজনক ফসল। দিন যতই যাচ্ছে, এখানে হলুদের চাষ ততই বাড়ছে। হলুদ চাষে কোনো ঝুঁকি নেই। খরচও কম লাগে। খেতে কোনো পোকা আক্রমণ করে না। পরিচর্যাও তেমন করা লাগে না।
মেনানগর গ্রামের কৃষক আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আগোত মুইও খালি ধানের আবাদ করছুনুং। কিন্তু গত বছর পড়ি থাকি উচ্চা জমিতগুলাত হলুদ আবাদ করি ভালোয় লাভ করুছুন। এই জন্যে মুই এ্যালা মোর উচা জমিগুলোত খালি হলুদ আবাদ করোং। এইবার এক একরে হলুদ আবাদ করি লাভ করছুং ৩০ হাজার টাকা।’
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ৮৭০ একর জমিতে হলুদ চাষ হয়েছে। এবার ফলন ভালো হওয়ায় এবং মৌসুমের শুরুতে দাম বেশি পাওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। আজ মঙ্গলবার তারাগঞ্জ বাজারে চাষিদের ১৪ টাকা কেজি দরে কাঁচা হলুদ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই মেয়েকে নিয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের উত্তর পাশে খেত থেকে হলুদ তুলছিলেন দৌলতপুর গ্রামের সেকেন্দার হোসেন। এই প্রতিবেদক ছবি তুলছেন দেখে এগিয়ে এসে বলেন, ‘হলুদ চাষে লাভ আছে। মুই এবার ২০ হাজার টাকা খরচ করি ১০০ শতক জমিতে হলুদ চাষ করছুং। হলুদ পাছুন ৯০ মণ। প্রতি মণ ৫৬০ টাকা করি ৯০ মণ হলুদ বেচাছুন ৫০ হাজার ৪০০ টাকা। খরচ বাদ দিয়া লাভ হইছে ৩০ হাজার ৪০০ টাকা।’
তারাগঞ্জ হাটে হলুদ বিক্রি করতে আসা ভীমপুর গ্রামের কৃষক জাহিনুর ইসলাম (৩৮) বলেন, ‘হলুদ হামার ভাগ্য ভালো করি দিছে। যেটে গাড়েন সেটেই হলুদ হওচে। বাড়ি আশপাশের পড়ি থাকা জমিত হলুদ চাষ করি হামার ভালোয় আয় হওছে। হলুদ চাষ করেত খরচও তেমন নাই। খাটুনিও নাই। বাজারোত আইজ কাচা হলুদ ৫৬০ টাকা মণ দরে।’
জানতে চাইলে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ওয়াজেদ হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে জমি চাষ করে হলুদ রোপণ করা হয়। তোলা হয় ডিসেম্বর–জানুয়ারি মাসে। একরে ১০০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত হলুদ হয় হয়ে থাকে।