২০০৪ সালের ২১ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। এখানে প্রায় ২৯ হাজার বাসিন্দা রয়েছে। ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত এ পৌরসভায় সে সময় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সরু গলির শহর হওয়ায় দুটি রিকশা এপাশ-ওপাশ চলাচল করতে গেলেই সমস্যা হয়। দেখা দেয় যানজটের। যত্রতত্র ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে ময়লা-আবর্জনা। কোথাও নেই ড্রেনেজের (নর্দমা) ব্যবস্থা। রয়েছে ভাঙাচোরা আর অপ্রশস্ত রাস্তাঘাট। দিন-রাত সমানতালে মশার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হতে হয়। অপর্যাপ্ত সড়কবাতির কারণে সন্ধ্যার পর অধিকাংশ সড়ক অন্ধকারে আচ্ছন্ন থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলে পানি–কাদায় একাকার হয়ে যায় অধিকাংশ রাস্তা।
রোববার সরেজমিনে এমন অবস্থা দেখা গেছে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভার। স্থানীয়রা বলেন, ১৬ বছর ধরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকার কারণে পৌরসভার সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ফলে নাগরিক দুর্ভোগ ক্রমে বাড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ২১ জানুয়ারি ৬ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের আজমিরীগঞ্জ পৌরসভা গঠিত হয়। এখানে প্রায় ২৯ হাজার বাসিন্দা রয়েছে। ৯টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে গঠিত ‘গ’ শ্রেণিভুক্ত এ পৌরসভায় সে সময় তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রশাসক হিসেবে বিএনপির নেতা মো. গোলাম ফারুককে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাঁর নিয়োগের পরপরই শুরু হয় ওয়ার্ড বিভক্তির কার্যক্রম।
ওয়ার্ড বিভক্তি কার্যক্রমের সময় সীমানা-সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামলা করেন। মামলাটি এখনো চলমান থাকায় এত দিনেও পৌরসভায় কোনো ধরনের নির্বাচন হয়নি। এ অবস্থায় গোলাম ফারুক টানা ১৫ বছর ধরে প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি না থাকায় পৌরবাসী বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন। এমনকি এখন পর্যন্ত পৌরসভারই স্থায়ী কোনো ভবন নির্মিত হয়নি।
আজমিরীগঞ্জ সরকারি ডিগ্রি কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক কল্যাণ ব্রত দাস বলেন, পৌরসভার অধিকাংশ সড়কই সরু। ফলে যান চলাচলের পাশাপাশি পথচারীদেরও সমস্যা হচ্ছে। সড়কগুলো আরেকটু প্রশস্ত করা গেলে নাগরিক ভোগান্তি কমত।
সরেজমিন দেখা গেছে, সিনেমা হল রোড, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, শহীদ জগৎজ্যোতি সড়ক, কাকাইলেছেও নৌঘাট রোড, লাল মিয়া বাজার রোড, উপজেলা পরিষদের অভ্যন্তরীণ রাস্তাসহ অন্তত ১২টি এলাকার সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। ময়লা-আবর্জনা পড়ে থাকতে দেখা গেছে থানা রোড, রামকৃষ্ণ মিশন রোড, লালা মিয়া বাজার রোড, সিনেমা হল রোডসহ কয়েকটি এলাকায়।
পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর শহরের রাস্তাঘাট ও নর্দমা নির্মাণের একটি প্রকল্প পাসের প্রক্রিয়ায় রয়েছে। অন্যান্য সমস্যাও তিনি সমাধানের জন্য নিরন্তর চেষ্টা করছেন।