পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে মঙ্গলবার জগন্নাথপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ
পরিবহন ধর্মঘট চলাকালে মঙ্গলবার জগন্নাথপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। জগন্নাথপুর, সুনামগঞ্জ

সড়ক সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথপুরে ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার

জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর (জগন্নাথপুর-সিলেট) সড়ক সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথপুর উপজেলায় চলা পরিবহন ধর্মঘট দিন শেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই মাসের মধ্যে সড়কের সংস্কারকাজ বাস্তবায়ন করা হবে, উপজেলা প্রশাসনের এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে আজ মঙ্গলবার বিকেলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়।

জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে পরিবহন মালিক–শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে আজ বিকেলে বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসানের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন জগন্নাথপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বিজন কুমার দেব, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী, পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজামুল করিম প্রমুখ।

ইউএনও মেহেদী হাসান বলেন, পরিবহন মালিক–শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সড়কের গর্তগুলো ভরাট করে এটি যান চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হবে বলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করেন।

উপজেলা পরিবহন মালিক–শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি নিজামুল করিম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে বুধবার থেকে গাড়ি চলবে।

এর আগে সকাল থেকে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর (জগন্নাথপুর-সিলেট) সড়ক সংস্কারের দাবিতে জগন্নাথপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পরিবহন ধর্মঘট করছিলেন পরিবহনশ্রমিকেরা।

এলজিইডি জগন্নাথপুর ও বিশ্বনাথ উপজেলা কার্যালয় ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ২৬ কিলোমিটার দীর্ঘ জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের জগন্নাথপুর অংশের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য গত বছর দরপত্র আহ্বান করা হয়। মাদারীপুরের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হামীম সালেহ (জেভি) কাজটি পায়। নিয়ম অনুযায়ী, দরপত্র বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বান করার কথা থাকলেও জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে স্থানীয় সাংসদ পরিকল্পনামন্ত্রীর সুপারিশে সময়ক্ষেপণ না করতে ২০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে ওই প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। কার্যাদেশ অনুয়ায়ী, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কে কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও মার্চের প্রথম দিকে কাজ শুরু হয়। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে সড়ক নির্মাণের কাজ বন্ধ হয়ে যায়।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক খোকন মিয়া বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাসের দিকে কার্যাদেশ পেয়েই আমরা কাজ শুরু করি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে কাজ বিঘ্নিত হয়।’

জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, ২০ শতাংশ অতিরিক্ত দরে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের ১৩ কিলোমিটার সড়ক সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি ৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দে জেভি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। করোনা পরিস্থিতি ও পাথরসংকটের কারণে কাজ কিছুটা বিঘ্ন হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ঠিকাদারকে বলেছি সড়কটি যান চলাচলের উপযোগী করতে গর্তগুলো ভরাট করে দিতে। সেই লক্ষ্যে ঠিকাদার কাজ করছেন।’