ছয় বছরের লাবণীর মা ছিলেন বাক্প্রতিবন্ধী। তাই প্রায় এক বছর আগে তাঁকে তালাক দেন বাবা। মা তাকে সঙ্গে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দেওয়া হয়নি। কিছুদিনের মধ্যেই বাবা আরেকটি বিয়ে করেন। ঘরে সৎমা আসার পর লাবণীর ঠাঁই হলো গোয়ালঘরে। সেখানে তাকে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হতো। লাবণীকে এই বন্দীদশা থেকে গতকাল শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা সদরের আইতলা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শিশু লাবণীর প্রতি অবহেলা ও তাকে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে তার বাবা আফজাল খান, সৎমা রুপা বেগম ও দাদি মর্জিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। লাবণীকে পাঠানো হয়েছে খুলনার শেখ রাসেল পুনর্বাসন কেন্দ্রে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আফজালের প্রথম স্ত্রীর নাম নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তিনি দুই সন্তানের জননী। তারা হলো আবদুর রহমান (১৫) ও লাবণী খান (৬)। মাসখানেক আগে লাবণীর মায়ের মৃত্যু হয়। এদিকে শিশু লাবণীকে গোয়ালঘরে আটকে রাখার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া হয়। ঘটনাটি এলাকায় হইচই ফেলে দেয়।
খুলনা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সিএমএম কোর্টের প্রবেশনাল অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি শুক্রবার রাতে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে ঘটনাটি শোনেন। এরপর গতকাল সকালে ওই বাড়িতে যান। তখনো মেয়েটি ওই গোয়ালঘরের মধ্যে আটকা ছিল। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। মেয়েটির ওপর এমন নির্যাতন করা হয়েছে যে সে অস্বাভাবিক আচরণ করে। সে অপুষ্টিতে ভুগছে। ইউনিয়ন সমাজসেবার কর্মী আনসার আলী বাদী হয়ে ডুমুরিয়া থানায় মামলা করেন।
ডুমুরিয়া থানার ওসি হাবিবুল হোসেন বলেন, লাবণীর বাবা, সৎমা ও দাদিকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।