স্বামীর প্রতিদ্বন্দ্বী স্ত্রী, মুখোমুখি দুই ভাই

কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া ও তাঁর স্ত্রী সুলতানা আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া। এই ইউপিতে মনোনয়ন জমা দেওয়া পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আলফু মিয়ার স্ত্রী সুলতানা আক্তারের নামও রয়েছে।

একই উপজেলার ইসলামপুর পূর্ব ইউপিতে আপন দুই ভাই চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। একই পরিবার থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার দুটি ঘটনা এখন উপজেলায় বেশ সাড়া ফেলেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া টানা দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। গত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তিনি জয়ী হয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে এবারও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছেন তিনি।

স্বামী–স্ত্রী দুজনেই মনোনয়নপত্র জমা দিলেও তাঁরা নির্বাচনে একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী থাকবেন না বলে জানিয়েছেন কাজী আবদুল আদুদ আলফু মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার স্ত্রীকে ব্যাকআপ হিসেবে প্রার্থী করিয়েছি। এটা একটি কৌশল। আমার বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা আছে। গতবার জেলে থাকা অবস্থায়ও আমি জয় পেয়েছি। মামলাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে যদি আমার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়, সেজন্যই স্ত্রীকে ব্যাকআপ হিসেবে রেখেছি। আমার প্রার্থিতা টিকে গেলে স্ত্রী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবেন।’

দুই ভাই আলমগীর আলম ও মাসুক আহমদ

এদিকে কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পূর্ব ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে উপজেলার খায়েরগাঁও গ্রামের আপন দুই ভাই আলমগীর আলম ও মাসুক আহমদ মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। আলমগীর আলম উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

দুই ভাইয়ের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারেও ‘ব্যাকআপ’ তত্ত্ব দিয়েছেন মাসুক আহমদ। তিনি প্রথম আলোকে জানান, তাঁর ভাইয়ের কাগজপত্রে কোনো সমস্যা নেই। এরপরও ব্যাকআপ হিসেবে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। ভাইয়ের প্রার্থিতা টিকে গেলে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেব। যেহেতু ভোটের মাঠে তাঁদের অবস্থান ভালো, তাই তাঁরা কোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে চান না।

এ প্রসঙ্গে কথা বলার জন্য আলমগীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া গেছে।

পুরো বিষয়টিকে ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতির ‘বাজে উদাহরণ’ হিসেবে মনে করেন সুশাসনের জন্য নাগরিক–সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি রীতিমতো অনৈতিক। যেকোনো মূল্যে হোক, ক্ষমতায় থাকতেই হবে—এমন মানসিকতা থেকেই স্বামী-স্ত্রী এবং আপন ভাই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এটি দাপট ও ক্ষমতায়নের অসুস্থ প্রতিযোগিতা।