পটুয়াখালীর বাউফলে বীরপাশা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৬টি গাছ কেটে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন অভিযোগ করেছেন, বন বিভাগ ও উপজেলা কমিটির অনুমতি ছাড়াই ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম গাছগুলো কেটে বিক্রি করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষক দাবি করেছেন, গাছগুলোর কারণেই বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গাছগুলো কাটা হয়েছে।
গতকাল বুধবার বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, গাছগুলো কাটার পর টমটমে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ১৬টি গাছের মধ্যে ১৪টি মেহগনি এবং ১টি করে বকুল ও শিশুগাছ আছে। পাঁচ দিন আগে গাছগুলো কাটা শুরু হয়। গতকাল এ কাজ শেষ হয়েছে। গাছগুলো কিনে নিয়েছেন গিয়াস উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি জানান, গাছগুলো তিনি প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকায় কিনেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, গাছগুলো খুবই কম দামে বিক্রি করা হয়েছে। এগুলোর দাম কমপক্ষে এক লাখ টাকা হওয়ার কথা।
নিয়মানুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠানের গাছ কাটতে হলে বন বিভাগ ও গাছ কাটাসংক্রান্ত উপজেলা কমিটির অনুমতি লাগে। ওই কমিটির সভাপতি হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। কিন্তু বিদ্যালয়ের গাছ কাটার সময় তাঁদের কারও অনুমতি নেওয়া হয়নি। জানা যায় বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য গাছগুলো লাগিয়েছিলেন।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারে না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।জাকির হোসেন, ইউএনও, বাউফল
গাছ কাটার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম দাবি করেন, গাছগুলোর কারণে বিদ্যালয়ের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছিল। আগামী বছরের জানুয়ারিতে বিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপিত হবে। এ কারণে গাছগুলো কাটার জন্য এলাকাবাসীর চাপ ছিল। তাই বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গাছগুলো কেটে বিক্রি করা হয়েছে।
বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলী হাওলাদার বলেন, গত বছর ধারদেনা করে বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ওই দেনা পরিশোধের জন্য প্রধান শিক্ষক ও সাধারণ শিক্ষকেরা সিদ্ধান্ত নিয়ে গাছগুলো বিক্রি করেছেন।
ইউএনও জাকির হোসেন বলেন, বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটি গাছ কাটার অনুমতি দিতে পারে না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।