চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের নিখোঁজ বন্দী ফরহাদ হোসেন কারাগারের নির্মানাধীন চার তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে পালিয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ সোমবার দিনভর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের দিয়ে তল্লাশি চালানোর পর কমিটির প্রধান এ তথ্য দিয়েছেন।
গত শনিবার ভোর সোয়া পাঁচটায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্ণফুলী ওয়ার্ড নামের ভবন থেকে নিখোঁজ হন হত্যা মামলার আসামি ফরহাদ হোসেন। সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়, ফরহাদ ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে নেন। এরপর তাঁকে আর সিসি ক্যামেরায় দেখা যায়নি। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও ফরহাদকে পাওয়া যায়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, বন্দী ফরহাদ হোসেন কারাগারের ফাঁসির সেলের ভবনের পাশে নির্মাণাধীন চার তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে পালিয়েছেন। পালাতে কেউ সহযোগিতা করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নগরের সদরঘাট থানার একটি হত্যা মামলায় গত ৯ ফেব্রুয়ারি কারাগারে আনা হয় ফরহাদকে। এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা হয়। বন্দী উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় কারাধ্যক্ষ (জেলার) ও উপকারাধ্যক্ষকে (ডেপুটি জেলার) দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। দুই কারারক্ষীকেও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গতকাল রোববার কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মোমিনুর রহমানের নির্দেশে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ ঘটনার তদন্তে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাঁদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটি আজ সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছে। এ ছাড়া চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আরেকটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
কারাগারের নিরাপত্তার ঝুঁকিতে শঙ্কিত কারা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও। এসব নিয়ে কারাগারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে। এর আগে কারা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক দেশের ৬৮টি কারাগারে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, ‘কোনো কোনো কারাগারে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, এমনকি বন্দী পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা পর্যন্ত ঘটছে, যা চরম প্রশাসনিক দুর্বলতার নামান্তর এবং মোটেই তা গ্রহণযোগ্য নয়। কারাগার একটি স্পর্শকাতর প্রতিষ্ঠান। বন্দী পলায়নসহ যেকোনো দুর্ঘটনা রোধকল্পে কারা কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করা আবশ্যক।’