সুন্দরবনে গতকাল সোমবার আগুন লাগার ঘটনা নিয়ে গত প্রায় দুই দশকে ২৩ বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর আগের ২২টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ‘৭১ একর’ বনভূমির নানা গাছ, গুল্ম-লতা পুড়ে গেছে। এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন সময়ে বন বিভাগের গঠিত তদন্ত দল নাশকতা, অসচেতনতা, অবহেলায় ফেলে দেওয়া বিড়ি বা সিগারেটের আগুনকে দায়ী করেছে।
বনকে সুরক্ষা দিতে বন ব্যবহারকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি, বন-সংলগ্ন মরে যাওয়া নদ-নদী খনন এবং সীমান্ত এলাকায় বেড়া ও ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণের সুপারিশ করেছিল তদন্ত কমিটিগুলো। তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি উল্লেখ করে বন বিভাগ, স্থানীয় লোকজন ও পরিবেশবাদীরা বনজ সম্পদ সুরক্ষিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের নথি থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ২০০২ সালে সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের কটকায় একবার, একই রেঞ্জের নাংলী ও মান্দারবাড়িয়ায় দুবার, ২০০৫ সালে পচাকোড়ালিয়া, ঘুটাবাড়িয়ার সুতার খাল এলাকায় দুবার, ২০০৬ সালে তেড়াবেকা, আমুরবুনিয়া, খুরাবাড়িয়া, পচাকোড়ালিয়া ও ধানসাগর এলাকায় পাঁচবার, ২০০৭ সালে পচাকোড়ালিয়া, নাংলি ও ডুমুরিয়ায় তিনবার, ২০১০ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১১ সালে নাংলীতে দুবার, ২০১৪ সালে গুলিশাখালীতে একবার, ২০১৬ সালে নাংলী, পচাকোড়ালিয়া ও তুলাতলায় তিনবার, ২০১৭ সালে মাদ্রাসারছিলায় একবার এবং সবশেষ চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
২২ বারের অগ্নিকাণ্ডে ৭১ একর ৬৬ শতাংশ বনজ সম্পদের (সুন্দরী গাছসহ বিভিন্ন লতা-গুল্ম) পুড়ে যায়, যার আর্থিক মূল্য ১৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৩৩ টাকা বলে বন বিভাগ জানিয়েছে।
সর্বশেষ সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে গতকাল সন্ধ্যায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে বন বিভাগ। শরণখোলা রেঞ্জের এসিএফ মো. জয়নাল আবেদীনকে প্রধান করে গঠিত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম ও শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা আবদুল মান্নান। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে (ডিএফও) প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।