সুনামগঞ্জে বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন

বাঁধ ভেঙে ফসলহানির প্রতিবাদে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের সদস্যদের মানববন্ধন। রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে
ছবি: প্রথম আলো

বাঁধ নির্মাণে গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ ভেঙে ফসলহানির প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয়েছে। আজ রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের আলফাত স্কয়ারে ‘হাওর বাঁচাও আন্দোলন’ সংগঠনের সদস্যরা এ কর্মসূচি পালন করেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এবার শুরু থেকেই বাঁধ নির্মাণের কাজে গাফিলতি ছিল। প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা ব্যস্ত ছিলেন প্রকল্প ও ব্যয় বাড়ানো নিয়ে। স্থানীয় প্রভাবশালী ও ক্ষমতাসীন দলের কিছু লোকজনকে নিয়ে পাউবো কর্মকর্তারা এসব অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছেন। কাজ হয়েছে দায়সারাভাবে। এখনো অনেক প্রকল্পে কাজ শেষ হয়নি। অথচ এক মাস আগে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। বক্তারা আরও বলেন, হাওরে এখন বাঁধ–বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সরকারি টাকা লুটপাট চলছে। কাজের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে কোনো ফল হয় না। কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম-দুর্নীতির কারণেই হাওরের ফসল এখন ঝুঁকিতে পড়েছে।

মানববন্ধনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, জেলা কমিটির সহসভাপতি আলী হায়দার, সদস্য সালেহীন চৌধুরী, এ কে কুদরত পাশা, ওবায়দুল হক, শহীদনূর আহমদ প্রমুখ বক্তৃতা করেন। তাঁরা জানান, বাঁধ ভেঙে ফসলহানির পর এখন পাউবো বলছে, এটি নাকি তাদের বাঁধ নয়। অথচ এই বাঁধে উপজেলার ২৫ নম্বর প্রকল্পের মাধ্যমে আট লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এখন নিজেদের গা বাঁচাতে দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে প্রশাসন ও পাউবো।

পাউবো সূত্রে জানা যায়, এবার সুনামগঞ্জ জেলার ১১টি উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ৭২৯টি প্রকল্পে ৫২০ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারের কাজ হয়েছে। এর জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২০ কোটি টাকা। হাওরে বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি।

সুনামগঞ্জে পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী ও হাওরে বাঁধ নির্মাণসংক্রান্ত জেলা কমিটির সদস্যসচিব মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, হাওরে বাঁধের কাজ নীতিমালা অনুযায়ী হয়েছে। হঠাৎই উজান থেকে ব্যাপক পরিমাণে পাহাড়ি ঢল নামায় কোনো কোনো বাঁধে সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেখানে সমস্যার খবর পাওয়া যাচ্ছে, সেখানেই কাজ করা হচ্ছে। কাজে কোনো গাফিলতি বা অনিয়ম নেই।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, জেলায় ১ লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। নদ, নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন হাওরে ফসল ঝুঁকির মুখে আছে।