সুনামগঞ্জে জলমহাল নিয়ে বিরোধে হামলায় নিহত ১, আহত ১০

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলায় একটি জলমহালের দখল নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় ১ ব্যক্তি নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের তেরহাল গ্রামের পাশের দামাইর বিলের দখল নিয়ে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জৈন উদ্দিনের (৬৫) বাড়ি তেরহাল গ্রামে।

পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, তেরহাল গ্রামের পাশের দামাইর জলমহালটি নিয়ে গ্রামের আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি ও তেরহাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লোকজনের মধ্যে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে দুই পক্ষের আদালতে মামলাও আছে। এ আগেও তাদের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষ হয়েছে।

আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সদস্য ও নিহত জৈন উদ্দিনের ছোট ভাই আবদুল আমিন জানান, তাঁদের সমিতির নামে বিলটি ১৪২৬ বাংলা থেকে ১৪২৮ বাংলা পর্যন্ত ইজারা আছে। বিলটি ২০ একরের নিচে হওয়ায় তাঁরা সেটি উপজেলা প্রশাসন থেকে ইজারা নিয়েছেন। সে অনুযায়ী তাঁরা গত বছর থেকে বিলের দখলে আছেন এবং মাছ আহরণ করছেন। কিন্তু গ্রামের তেরহাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির লোকজন বিলটি দখলের জন্য বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেন। এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিস হয়েছে।

আবদুল আমিন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরে প্রতিপক্ষের ৩০-৩৪ জন লোক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বিলের খলায় আক্রমণ করে খলাঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় বিলে থাকা তাঁদের লোকজন প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল। সকাল আটটার দিকে তাঁর ভাই জৈন উদ্দিন বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলে করে এলাকার নোয়াখালী বাজারে যাওয়ার পথে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। হামলায় আহত তিনজনকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আবদুল আমিন অভিযোগ করেন হামলা ও হত্যার ঘটনায় তেরহাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, সদস্য হেলন মিয়াসহ আরও কয়েকজন নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে দাবি করেন আবদুল আমিন।

জৈন উদ্দিনের ছেলে মিজান হোসেনও (২৩) ঘটনার সময় আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমার বাবাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মারা হয়েছে। তাঁর পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তেরহাল মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম ও সদস্য হেলন মিয়ার মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তাদীর হোসেন বেলা একটায় জানান, তাঁরা ঘটনাস্থলে আছেন। জলমহাল নিয়ে বিরোধের জেরেই জৈন উদ্দিন প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হয়েছেন। এখন পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান চলছে।

এতে আগে ৭ জানুয়ারি ধরমপাশা উপজেলার সুনই জলমহালে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় শ্যামা চরণ বর্মণ (৬৫) নামের এক মৎস্যজীবীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়।