পাবনার সুজানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ দুই নেতার বিরোধ চরমে পৌঁছেছে। এবার সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন সভাপতি আবদুল ওহাবকে ‘খুনের মদদদাতা’ বলে মন্তব্য করেছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে পাবনা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এর আগে ২১ মার্চ সভাপতি আবদুল ওহাব একই স্থানে সংবাদ সম্মেলন করে শাহিনুজ্জামানকে চাঁদাবাজ বলে মন্তব্য করেন। সেই সঙ্গে শাহিনুজ্জামানের বিরুদ্ধে দলীয় নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও বিএনপি-জামায়াতকে নিয়ে রাজনৈতিক বলয় তৈরির অভিযোগ তোলেন তিনি। এ নিয়ে প্রথম আলো অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
শীর্ষ দুই নেতার এমন দ্বন্দ্বে সুজানগর আওয়ামী লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানালেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘দুই নেতা ব্যক্তিগত একটি বিষয়কে রাজনৈতিক রং দিচ্ছেন। জমিসংক্রান্ত বিরোধে একটি খুনের ঘটনায় নেতা–কর্মীদের আসামি করা হয়েছে। এতে দল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আমরা দুজনকেই বিরোধ মীমাংসার জন্য তাগিদ দিয়েছি। শিগগিরই এই বিরোধ না মিটলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে তাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
লিখিত বক্তব্যে শাহিনুজ্জামান বলেন, আবদুল ওহাবের কোনো জনভিত্তি নেই। তিনি সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে রাজনীতি করেন। গত কয়েক বছরে উপজেলায় আওয়ামী লীগের চার নেতা খুন হয়েছেন। প্রতিটি খুনের মদদদাতা তিনি (আবদুল ওহাব) ছিলেন। সর্বশেষ ১৪ মার্চ সুজানগর পৌরসভার কর্মচারী আল-আমিনের খুনের নেপথ্য কারিগর তিনিই ছিলেন। হত্যাকারীদের রক্ষা করতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শাহিনুজ্জামানের দাবি, সভাপতি আবদুল ওহাব নৌকাবিরোধী ও দলীয় নেতা–কর্মীদের স্বার্থবিরোধী ব্যক্তি। তাঁর কারণেই দলে ভাঙন তৈরি হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে রক্ষায় অবিলম্বে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সুজানগর পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি আবদুস সাত্তার, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক রবিউল হক, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম প্রমুখ।
জানতে চাইলে সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে সভাপতি আবদুল ওহাব বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলন ও টেম্পোস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি থেকে এমন কোনো কর্মকাণ্ড নেই যে শাহিনুজ্জামান করেন না। তিনি আধিপত্য রক্ষায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে এখন দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে লেগেছেন। তাঁর কারণেই সুজানগর আওয়ামী লীগ ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে।