চট্টগ্রাম শহরে এক ব্যক্তির বাড়ির ভাড়াটে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাঁর বাড়িটি লকডাউন করা হয়। তিনিসহ কয়েকটি পরিবারকে কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি কোয়ারেন্টিন না মেনে সবার চোখকে ফাঁকি দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে সীতাকুণ্ড উপজেলায় গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। গতকাল রোববার রাতে তাঁর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এদিকে ওই ব্যক্তির করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ায় তাঁর গ্রামের বাড়িসহ পাশের ৪৪টি পরিবারকে লকডাউন ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
গতকাল রাত সাড়ে ১১টার দিকে সীতাকুণ্ড থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে ওই ব্যক্তির গ্রামের বাড়ি যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন রায়। পরে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তিনি লকডাউনের ঘোষণা দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ ও সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ হোসেন মোল্লা।
এর আগে গতকাল রাতে চট্টগ্রামে নতুন করে শিশুসহ ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি জানান বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার। ওই ছয়জনের মধ্যে সীতাকুণ্ডের ওই ব্যক্তিও রয়েছেন।
ফৌজদারহাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক এম এ হাসান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে সীতাকুণ্ড থেকে ওই ব্যক্তি (৪৫) হাসপাতালে আসেন। তাঁকে সন্দেহভাজন ধরে নিয়ে হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তিনি ছাড়া আরও পাঁচজন এখন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রয়েছেন।
সলিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোস্তাকিম আরজু প্রথম আলোকে বলেন, ওই ব্যক্তি ছয় বছর ধরে চট্টগ্রাম নগরে নিজের বাড়িতে বসবাস করছিলেন। ৮ এপ্রিল তাঁর ভাড়াটে একজন পোশাকশিল্প কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। ওই দিনই বাড়িটি লকডাউন করে প্রশাসন। লকডাউন ফাঁকি দিয়ে স্ত্রীকে নিয়ে তিনি সীতাকুণ্ডে গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। সেখানে তিনি দুই ঘণ্টা ছিলেন। পরে স্থানীয় লোকজনের অনুরোধে তিনি হাসপাতালে যান।
ইউএনও মিল্টন রায় প্রথম আলোকে বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়ি ও তাঁর পাশের বাড়িতে ৪৪টি পরিবার রয়েছে। ওই ব্যক্তি বাড়িতে আসার পর পাশের বাড়িতে দোয়া নিতে যান। তাই দুই বাড়ির পরিবারগুলোকে লকডাউন করা হয়েছে।