পাঁচ-ছয়টি কনটেইনারে এখনো দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আকাশে উড়ছে বিষাক্ত রাসায়নিক ও পুড়ে যাওয়া কনটেইনার থেকে বের হওয়া ধোঁয়া। ছবি আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তোলা
পাঁচ-ছয়টি কনটেইনারে এখনো দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আকাশে উড়ছে বিষাক্ত রাসায়নিক ও পুড়ে যাওয়া কনটেইনার থেকে বের হওয়া ধোঁয়া। ছবি আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তোলা

সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপো যেন যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা

চারিদিকে ছড়িয়ে আছে আগুনে পোড়া ধ্বংসাবশেষ। কোথাও পুড়ে যাওয়া পোশাক, আবার কোথাও বিস্ফোরিত হওয়া বিভিন্ন রাসায়নিকের ছোট ছোট কনটেইনার। বিস্ফোরণের পর লোহার টুকরা, বড় কনটেইনার আর কাভার্ড ভ্যানের ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে আছে। ডিপোর ভেতরে ৬৫০ মিটার দীর্ঘ একটি আধাপাকা টিনশেড ভবন ছিল। সেটিও ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে। এর মধ্যে পাঁচ-ছয়টি কনটেইনারে এখনো দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। আকাশে উড়ছে বিষাক্ত রাসায়নিক ও পুড়ে যাওয়া কনটেইনার থেকে বের হওয়া ধোঁয়া। ডিপোর ভেতরের অবস্থা যেন এক যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকা।

ডিপোর ভেতরে ৬৫০ মিটার দীর্ঘ আধাপাকা টিনশেড ভবনটিও ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক থেকে দক্ষিণে ১০০ মিটারের মধ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কনটেইনারগুলো দাউ দাউ করে জ্বলছে। মূল ফটক থেকে ১০০ মিটার পূর্ব দিকে গেলে টিনশেডের আধাপাকা গুদাম। গুদামের সামনে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে হাইড্রোজেন পার–অক্সাইড রাসায়নিকের ছোট ছোট নীল রঙের কনটেইনার। গুদামের উত্তর পাশে অফিসকক্ষ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে লাগানো এসিগুলোর ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। গুদামে সব গার্মেন্টস পণ্য রাখা ছিল। সেগুলো এখনো তুষের আগুনের মতো জ্বলছে। দক্ষিণ পাশের সামনের অংশে তিনটি কনটেইনারে এখনো আগুন জ্বলছে।

ডিপোর নিরাপত্তাকর্মী আবদুল সাত্তার প্রথম আলোকে বলেন, এই ধরনের বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড তাঁর ৫৫ বছরের জীবনে কখনো দেখেননি তিনি। চারিদিকে সবকিছু ধ্বংস হয়ে পড়ে আছে। এসব দেখে তিনি গত রাতে ঘুমাতে পারেননি।

পুলিশ বলেছে, এখন যে কনটেইনারগুলো জ্বলছে সেগুলো গার্মেন্টস পণ্য

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে ডিপোর ভেতরে এখনো রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনার আছে বলে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকে ঘোষণা করা হচ্ছিল। এরপর সব গণমাধ্যমকর্মীকে নিরাপত্তার স্বার্থে ডিপো থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।

সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, আগুন শতভাগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি এখনো। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আশপাশে পুকুরগুলোর পানি শেষ হয়ে গেছে। ফলে গাড়িতে করে বাইরে থেকে পানি এনে আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিসকে। এছাড়া কনটেইনারগুলো একটির সঙ্গে অন্যটি লাগানো থাকায় পানি সঠিক যায়গায় পৌঁছাতে পারছে না।

বিএম ডিপোর মূল ফটক থেকে ১০০ মিটার পূর্ব দিকে গেলে টিনশেডের আধাপাকা এ গুদামটির অবস্থান। ছবি আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তোলা

আজকের মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসবে বলে আশাপ্রকাশ করেন পুলিশ কর্মকর্তা আশরাফুল করিম। তিনি বলেন, এখন যে কনটেইনারগুলো জ্বলছে সেগুলো গার্মেন্টস পণ্য। কিন্তু বাতাসের তীব্রতা বেশি হওয়ায় আগুন দাউ দাউ করে জ্বলে উঠছে।