জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কুসুম্বা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মো. ময়নুল হাসানের আপেল প্রতীকে সিল মারা ১০০ ব্যালট পেপার পেয়েছেন জাহাঙ্গীর আলম নামের একজন ভোটার। তিনি সেগুলো বাইরে এনে অন্যদের দেখানোর পর অন্য প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। পুলিশ এসে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ সোমবার বেলা তিনটায় কুসুম্বা ইউপির শালাইপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
ভোটকেন্দ্রে গিয়ে জানা গেছে, কুসুম্বা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য পদে মোট তিনজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন মো. ময়নুল হাসান (আপেল), আজিজুল হক (মোরগ) ও ভুপেন চন্দ্র (টিউবওয়েল)। জাহাঙ্গীর আলম নামের ওই ভোটার বেলা তিনটার দিকে ভোট দিতে ৮ নম্বর বুথে প্রবেশ করেন। তাঁর দাবি, তাঁকে সদস্যদের যে ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হয়, তাতে আপেল প্রতীকে সিল দেওয়া ছিল। এরপর সন্দেহ হলে তিনি সব ব্যালেট পেপার উল্টে আপেল প্রতীকে সিল মারা দেখতে পান। পরে তিনি সেগুলো বাইরে এনে অন্যদের দেখান। এরপর এ নিয়ে অন্য দুই প্রার্থী ও তাঁদের কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তাঁরা সদস্য প্রার্থী মো. ময়নুল হাসানের প্রার্থিতা বাতিলের দাবি জানিয়ে ভোটকেন্দ্রে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে থাকেন। এতে কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার পর ফের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এরপর পুলিশ সব বুথ থেকে ওই সদস্য প্রার্থী মো. ময়নুল হাসানের এজেন্টদের বের করে দেয়। সিল মারা ব্যালট পেপারগুলো ওই ভোটারের কাছে আছে বলে জানা গেছে। পুলিশ সেগুলো উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তাঁকে সদস্যদের যে ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হয়, তাতে আপেল প্রতীকে সিল দেওয়া ছিল। এরপর সন্দেহ হলে তিনি সব ব্যালট পেপার উল্টে দেখেন আপেল প্রতীকে সিল মারা। পরে তিনি সিল দেওয়া ব্যালট পেপারগুলো বাইরে এনে অন্যদের দেখান।
প্রতিদ্বন্দ্বী সদস্য প্রার্থী আজিজুল হক অভিযোগ করে বলেন, ‘সদস্য প্রার্থী মো. ময়নুল হাসানের আপেল প্রতীকে সিল মারা এক শ ব্যালেট পেপার পাওয়া গেছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সঙ্গে যোগসাজশ করে এই সিল মারা হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা ময়নুল হাসানের প্রার্থিতা বাতিল ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’ শালাইপুর উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমি সিল দেওয়া ব্যালেট পেপার সম্পর্কে কিছুই জানি না। তবে কিছুক্ষণ ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা সঠিক নয়।’
মো. ময়নুল হাসানের এজেন্ট হামিদা বিবি বলেন, ‘আমি চার নম্বর বুথে মো. ময়নুল হাসানের আপেল প্রতীকের এজেন্ট ছিলাম। পুলিশ এসে আমাকে বুথ থেকে বের করে দিয়েছে।’
পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র দেব প্রথম আলোকে বলেন, ময়নুল হাসানের আপেল প্রতীকের সিল মারা ব্যালট পেপার নিয়ে কেন্দ্রে একটু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল। এ জন্য ১৫ থেকে ২০ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। সিল মারা ব্যালট পেপার উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।