সিলেটের পাথর কোয়ারিগুলো খুলে দেওয়ার দাবিতে বিভাগের চার জেলায় দ্বিতীয় দিনের মতো ৭২ ঘণ্টার টানা পরিবহন ধর্মঘট চলছে। ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিন আজ বুধবারও সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমর্থনে সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ ও শ্রমিক সংগঠনের আহ্বানে মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে শ্রমিকেরা এই ধর্মঘট পালন করছেন। ফলে আজ বুধবারও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে সাধারণ যাত্রীরা। ধর্মঘটের কারণে দূরপাল্লার যানবাহন না পেয়ে গন্তব্যে যেতে পারেননি অনেকে। আবার নগরের অভ্যন্তরে এবং শহরতলি এলাকায় রিকশা ও মোটরসাইকেলে চেপে অনেকে গন্তব্যে যাওয়া–আসা করছেন। এতে বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। যাত্রীরা বলছেন, ধর্মঘট ও কর্মবিরতিকে পুঁজি করে রিকশাচালক ও অ্যাপের মাধ্যমে মোটরসাইকেলচালকেরা অতিরিক্ত মুনাফা লুটে নিচ্ছেন।
সংগঠনটি জানায়, সিলেটের পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে পাথর আহরণ, বিক্রয়, বিপণনসহ এই খাতে সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারকে নিয়ে গঠিত হয় বৃহত্তর সিলেট পাথরসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। পাথর কোয়ারিগুলো থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর আহরণের অনুমতির দাবিতে প্রায় তিন মাস ধরে সংগঠনটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। ৩ ডিসেম্বর মানববন্ধন করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সিলেটের পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। এতে কোনো সাড়া না পেয়ে বাধ্য হয়ে ধর্মঘট কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রথম দফায় ৯ ডিসেম্বর সিলেট জেলায় পণ্যবাহী পরিবহনে ৪৮ ঘণ্টা ধর্মঘট পালন করা হয়। এই কর্মসূচি পালনের পর দাবি আদায় না হওয়ায় সিলেট বিভাগে গণপরিবহনে ধর্মঘট আহ্বান করা হয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদের আহ্বান করা ধর্মঘট চলবে আগামী শুক্রবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত। ধর্মঘটে সিলেট বিভাগের বাস, ট্রাক, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, কোচ, লেগুনা, ট্যাংকলরি, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ সব গণপরিবহনের চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, বিদেশগামী যাত্রী, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্র ও জরুরি ওষুধ সরবরাহের গাড়ি ধর্মঘটের আওতামুক্ত থাকবে।
সিলেট বিভাগীয় ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান মালিক ঐক্য পরিষদ সাংগঠনিক সম্পাদক শাব্বীর আহমদ ফয়েজ বলেন, পাথর কোয়ারি থেকে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনা এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদের ডিও দেওয়ার পরও স্থানীয় প্রশাসন এটি তোয়াক্কা করছে না। বুধবার সিলেটের তেমুখী মোড়ে তাদের সমাবেশের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রিল সংযোজনে পুলিশের নির্দেশনা প্রত্যাহারসহ ছয় দফা দাবিতে সিলেট জেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক ও মালিকদের সংগঠন সোমবার ও মঙ্গলবার কর্মবিরতি পালন করেছে। মঙ্গলবার রাতে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের এক বৈঠকে কর্মবিরতি আরও এক দিন বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।