সিলেটে গতকাল মঙ্গলবার রাতভর ভারী বৃষ্টি হয়েছে। তবে আজ বুধবার সকালের দিকে আকাশে উঁকি দিয়েছে সূর্য। রাতের বৃষ্টিতে সিলেট নগরের বিভিন্ন সড়ক প্লাবিত হয়ে যায়। সকালে বৃষ্টি কমার সঙ্গে বিভিন্ন সড়কের পানি নেমে গেলেও বেশ কিছু এলাকা ও সড়ক জলমগ্ন হয়ে আছে।
এর আগে গতকাল সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছিল। পরে বেলা একটার পর থেকে সূর্যের দেখা মেলে। কিন্তু রাত নয়টার দিকে সিলেটে আবার ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, যা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। এরপর মধ্যরাত থেকে আজ সকাল পর্যন্ত থেমে থেমে বৃষ্টি হয়।
আজ সকালে নগরের বিভিন্ন এলাকা ও সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, নগরের তালতলা, জামতলা, মির্জাজাঙ্গাল, লালা দিঘীর পাড় ও শেখঘাট এলাকায় সড়ক-মহল্লায় পানি জমেছে। সেসব এলাকার মানুষের মধ্যে পানি বাড়া নিয়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। আবার বন্যার শঙ্কায় অনেকে বাসাবাড়ির মালামাল উঁচু স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। নগরের তালতলা এলাকার খাল থেকে ময়লা-আবর্জনা পরিচ্ছন্ন করতে দেখা গেছে সিলেট সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের।
নগরের শেখঘাট এলাকার বাসিন্দা সোয়াদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই দফার বন্যায় হঠাৎই ঘরে পানি ঢুকে বেশ কিছু মালামাল নষ্ট হয়ে গেছে। এবার বৃষ্টি দেখে আগেই নতুন করে কেনা মালামাল সরিয়ে নিয়েছি। ঘরের ভেতরে ইট বিছিয়ে উঁচু স্থানে তুলে রেখেছি।’
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর শেরপুর পয়েন্ট ছাড়া অন্য নদ-নদীর পানি বেড়েছে। কুশিয়ারা নদীতে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় আজ সকাল নয়টায় পানি কমেছে দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার। সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার তুলনায় আজ সকাল নয়টায় পানি বেড়েছে দশমিক ২৭ সেন্টিমিটার। নদীর ওই অংশে বৃষ্টি হয়েছে ১১৫ মিলিমিটার। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে গতকালের তুলনায় পানি বেড়েছে দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার। নদীর এ অংশে বৃষ্টি হয়েছে ১২৮ মিলিমিটার।
কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় ১০ দশমিক ৪৮ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত পানি অপরিবর্তিত আছে। লুভা নদীর পানি লুভা ছড়া পয়েন্টে গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় পানি দশমিক ৩৩ সেন্টিমিটার বেড়ে ১৩ দশমিক ৯৩ সেন্টিমিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ ছাড়া সারি নদের পানি সারিঘাট পয়েন্টে গতকাল মঙ্গলবারের তুলনায় বুধবার বেড়েছে দশমিক শূন্য ৬ সেন্টিমিটার।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, রাতের বৃষ্টির কারণে নদ-নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে। তবে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় শঙ্কার তেমন কারণ নেই। পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টি হলে পানি বাড়ার আশঙ্কা আছে। অন্যদিকে সুনামগঞ্জে পানি বেশি থাকায় সিলেট থেকে পানি ধীরগতিতে নামছে।