জিন্দাবাজার-জেলরোড সড়কটি সিলেট নগরের ব্যস্ততম এলাকা। দুটি এলাকাতেই রয়েছে শাতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, রেস্তোরাঁ ও বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি দপ্তরের কার্যালয়ও আছে।
এই সড়কের পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকার একটি কালভার্ট পূর্বঘোষণা ছাড়াই ভেঙে সংস্কারকাজ শুরু করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন। স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, এতে ব্যস্ততম এলাকা দিয়ে যাতায়াত করা পথচারী থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা–কর্মচারীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সেই সঙ্গে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করছেন। তাঁরা জানান, কালভার্টটি একটি অংশ রেখে নির্মাণকাজ করলে ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমত। কিন্তু পুরো কালভার্টটি ভেঙে ফেলায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। অন্য পথ দিয়ে যান চলাচল করায় দুই এলাকার ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। জনসাধারণের জন্য বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হলে দুর্ভোগের শিকার হতে হতে হতো না।
তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান দাবি করেন কলাভার্টটি ভাঙার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে আগেই অবহিত করা হয়েছে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘উন্নয়নকাজের জন্য জনসাধারণের সাময়িক দুর্ভোগ হচ্ছে। কালভার্ট ছোট হওয়ায় বর্ষার মৌসুমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এ জন্য কলভার্টটি ভেঙে বড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কালভার্টটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করতে।’ এক মাসের মধ্যে কালভার্টটি নির্মাণকাজ শেষ করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
গতকাল রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকার কালভার্টটির ভাঙা অংশে কয়েকটি বাঁশ ফেলে সাঁকো আকারে তৈরি করে পথচারীদের সাময়িক চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই সাঁকো দিয়েই পথচারীরা ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন। জিন্দাবাজার ও জেলরোড এলাকা দিয়ে আসা যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো ভাঙা কালভার্ট দেখে পুনরায় ফিরে যাচ্ছে। পরে বিকল্প সড়ক দিয়ে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছে। আবার কেউ কেউ ভাঙা অংশ পর্যন্ত এসে হেঁটে কালভার্ট পার হয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎই সড়কটির দুই পাশে যান চালচল বন্ধ করে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ কালভার্টটি ভাঙা শুরু করে। এ সময় সড়কটি দিয়ে যাতায়াত করা যানবাহনগুলোকে কালভার্ট এলাকায় পৌঁছে উল্টো দিকে ফিরে যেতে হয়েছে।
পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী মিহির ঘোষ বলেন, এখন ব্যবসার মৌসুম। সিলেটের প্রবাসীরা শীতে দেশে আসেন। স্বজনদের জন্য কেনাকাটা করেন নগরের জিন্দাবাজার, বারুতখানা ও জেলরোড এলাকায়। কালভার্টটি ভাঙা থাকায় ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
রাজিব কান্তি দে নামের এক পথচারী জানান, পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকার কালভার্ট ভাঙার বিষয়টি জানা ছিল না। শনিবার রাত ১০টার দিকেও কালভার্টটি ঠিক ছিল। গতকাল দুপুরে সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে এসে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে। জরুরি কাজের জন্য খাদিমনগর বিসিক এলাকার দিকে যাচ্ছিলেন তিনি।
স্থানীয় তিনজন বাসিন্দা এবং আরও দুজন ব্যবসায়ী বলেন, অনেকেই কালভার্ট ভাঙার বিষয়টি না জেনে যানবাহন নিয়ে পূর্ব জিন্দাবাজার এলাকায় পৌঁছে বিকল্প সড়ক ঘুরে যেতে হচ্ছে। জিন্দাবাজার এলাকা ও জেলরোড এলাকায় সিটি করপেরেশনের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি কিংবা পথচারী এবং যানবাহন চালকদের প্রতি নির্দেশিকা দেওয়া হলে দুর্ভোগ কিছুটা হলেও কমত। দ্রুত কালভার্টটি নির্মাণকাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান তাঁরা।