‘ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি’ বন্ধ, মহানগর ট্রাফিক পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারসহ ছয়টি দাবি আদায়ের জন্য ১১ অক্টোবর থেকে সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে সিলেট জেলা বাস-মিনিবাস-কোচ–মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন। আজ শনিবার দুপুরে সিলেটের কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় মানববন্ধন করে ধর্মঘটের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মানববন্ধন চলাকালে ট্রাফিক পুলিশের অযথা ‘হয়রানি’ বন্ধ, ভুল জায়গায় গাড়ি রাখার মামলা বন্ধ, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি ছাড়া রেকারিং বিল আদায় বন্ধ, বিআরটিএর লাইলেন্স প্রাপ্তিতে হয়রানি বন্ধ, মহানগর ট্রাফিক পুলিশের উপকমিশনার (ডিসি) ফয়ছল মাহমুদ, অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জ্যোতির্ময় সরকার ও ট্রাফিক সার্জন নুরুল আফছারকে প্রত্যাহার এবং মেয়াদোত্তীর্ণ লামাকাজি সেতু, শেওলা সেতু, শেরপুর সেতু, ফেঞ্চুগঞ্জ সেতু এবং শাহ পরান সেতু থেকে অতিরিক্ত টোল আদায় বন্ধ—এই ছয়টি দাবি তুলে ধরা হয়।
মানববন্ধনে শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম বলেন, গত ২৬ সেপ্টেম্বর ৬টি দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেওয়া হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে, ১০ অক্টোবর পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে। এ সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে ১১ অক্টোবর সিলেটে বাস ধর্মঘট পালন করবে বাস–মিনিবাস–কোচ–মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন।
হাজি ময়নুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবুল মুহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি রুনু মিয়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন, সহসাধারণ সম্পাদক মাহবুব মিয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাসনাত বক্তব্য দেন।
এদিকে ছয় দফা দাবি সম্পর্কে সিলেট মহানগর ট্রাফিক পুলিশের মাঠ পর্যায়ের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, ১ অক্টোবর একই দাবি নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা শ্রমিক ও মালিকদের সংগঠন ধর্মঘট ডেকেছিল। পরে সাধারণ চালকদের তোপের মুখে পড়ে তারা আবার সেটি প্রত্যাহার করে নেয়। এর আগে সিলেটের তেমুখী এলাকায় চাঁদাবাজি হয় অভিযোগ তুলে সুনামগঞ্জে ঢাকাগামী বাসের শ্রমিকেরা ধর্মঘট করেছিলেন। ট্রাফিক পুলিশ সেখানকার চাঁদাবাজিও বন্ধ করে দিয়েছে। এই দুই ক্ষোভ থেকে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। এতে সাধারণ পরিবহন শ্রমিকদের কোনো সমর্থন নেই।
ট্রাফিক পুলিশের তিন কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের দাবি প্রসঙ্গে ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার জ্যোতির্ময় সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কপথের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে ট্রাফিক বিভাগ যখন নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে, ঠিক তখনই এসব দাবি উত্থাপন করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা চলছে। আমাদের বিরুদ্ধে তাঁদের একটিই অভিযোগ, আমরা কোনো ছাড় দিচ্ছি না। সড়কে ট্রাফিক পুলিশের কোনো কার্যক্রম না চললেই যেন ভালো। তাঁদের দাবি অনেকটা এই রকম।’