ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেটের সব নদ-নদীর পানিতে ভাটার টান পড়েছে। সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি সারী, লোভাসহ সব নদ-নদীর পানি কমছে। গতকাল সোমবার দিনভর সারী-লোভার পানি বাড়লেও আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুরের পরিমাপ অনুযায়ী এ দুটো নদীর পানি কমছে।
কুশিয়ারার চারটি পয়েন্টের মধ্যে বিপৎসীমার ওপরে আছে শুধু ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টের পানি। সেখানে ধীরে হলেও কমছে পানি। আর সুরমা নদীর দুটো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ সকাল ও দুপুরে দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্য থেকে এ কথা জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ শহীদুজ্জামান সরকার।
পাউবো জানায়, সিলেটের দুই প্রধান নদী সুরমা ও কুশিয়ারার সঙ্গে বিভিন্ন শাখা নদীর মাধ্যমে মিলিত হয়েছে সীমান্ত থেকে নেমে আসা নদী সারী ও লোভা। সারী নদী জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলা হয়ে চেঙ্গেরখাল নদ দিয়ে সুরমায় মিশেছে। লোভা কানাইঘাট উপজেলায় মিশেছে সুরমা নদীর সঙ্গে। সুরমা নদীর বিভিন্ন শাখা নদী কুশিয়ারার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। সীমান্ত নদীতে পানি বাড়লে সুরমা ও কুশিয়ারার পানিও বাড়ে।
পাউবোর দৈনিক পানির স্তর-সম্পর্কিত তথ্যে (ডেইলি ওয়াটার লেভেল ডেটা) দেখা গেছে, গতকাল সারী ও লোভা নদীর পানি বাড়লেও আজ সকাল থেকে কমছে। সারী নদীর পানি সারীঘাট পয়েন্টে গতকাল সন্ধ্যায় ১০ দশমিক ২৮ মিটার থেকে নেমে আজ সকাল ছয়টায় ১০ দশমিক ১৪ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হয়। সকাল নয়টায় আরও এক ধাপ কমে দুপুর ১২টার দিকে সেখানে পানি ১০ দশমিক ১০ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
পানি কমার ধারা দেখা গেছে লোভা নদীতেও। কানাইঘাটের কাছে লোভার পানি গতকাল সন্ধ্যায় ১৩ দশমিক ৫০ মিটার থেকে কমে দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ২৮ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সারী ও লোভার পানি কমায় সুরমা ও কুশিয়ারার পানিও কমছে। গতকাল সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি ১২ দশমিক ৩৭ মিটার দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আজ সকালে ১২ দশমিক ৩৭ মিটার ও দুপুরে ১২ দশমিক ১৭ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।
বিপৎসীমার ওপরে থাকা কুশিয়ারার ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টেও পানি কমছে। তবে খুব ধীরে। গতকাল সন্ধ্যায় ৯ দশমিক ৯১ মিটার থেকে নেমে সকালে ৯ দশমিক ৮৯ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়। দুপুরে আরও এক ধাপ কমে ৯ দশমিক ৮৮ মিটার দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল। ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারার পানির বিপৎসীমা ৯ দশমিক ৪৫ মিটার।
ধলাইয়ের পানির বিপৎসীমা মাপার যন্ত্র স্থাপনে চিঠি
ভারতের বৃষ্টিপ্রবণ অঞ্চল চেরাপুঞ্জি থেকে বাংলাদেশে নেমে আসা ধলাই নদের পানির বিপৎসীমা পরিমাপযন্ত্র স্থাপনের জন্য কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুমন আচার্য পাউবোকে চিঠি দিয়েছেন। পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর চিঠিটি আজ পৌঁছানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চেরাপুঞ্জি থেকে বৃষ্টির পানির ঢলের সৃষ্টি হয়। এই ঢলের পানি পুরোটা ভারতের ভোলাগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ধলাই নদে নামে। সেখানে পানি পরিমাপযন্ত্র না থাকায় বিপৎসীমা নির্ণয় হয় না। আগামী বর্ষা মৌসুম থেকে বিপৎসীমা নির্দেশনা ব্যবস্থা চালু করতে এ বছর যন্ত্র স্থাপন করার জন্য তিনি চিঠি দিয়ে পাউবোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।