সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩১ জানুয়ারি। আজ বুধবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালত মোহাম্মদ ইসমাইল রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন।
বেলা দুইটার দিকে আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফরিদুল আলম। তিনি বলেন, আজ মামলার ২ নম্বর আসামি ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের পক্ষে অসমাপ্ত যুক্তি উপস্থাপন করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত। এর আগে মামলার অবশিষ্ট ১৪ জনের যুক্তি উপস্থাপন সম্পন্ন হয়েছে।
ফরিদুল আলম বলেন, হত্যার ঘটনায় প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলী জড়িত ছিলেন না বলে দাবি করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। কিন্তু তিনি আদালতে যুক্তি উপস্থাপন শেষে বলেছেন, আসামিদের যথাযথ শাস্তি না হলে আইনি পোশাক পরে ভবিষ্যতে এমন হত্যার ঘটনা আরও ঘটবে।
এর আগে সকালে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় প্রদীপ কুমার দাশের পক্ষে আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত আদালতকে বোঝানোর চেষ্টার করেন, সিনহা হত্যা মামলায় কিছুতেই প্রদীপ জড়িত থাকতে পারেন না। ইয়াবা ব্যবসায়ীরা তাঁকে (প্রদীপকে) ফাঁসিয়েছেন। কারণ, তিনি (প্রদীপ) টেকনাফের ইয়াবা নির্মূলে বড় ভূমিকা রাখেন। আর মামলার তদন্তভার র্যাবের হাতে দেওয়ার মাধ্যমে প্রচলিত আইনের ব্যত্যয় হয়েছে। র্যাবের এই তদন্ত প্রশ্নবিদ্ধ।
আসামিপক্ষের আইনজীবীদের সর্বশেষ যুক্তি উপস্থাপনের চতুর্থ দিনে আজ সকাল ১০টায় শুরু হয় এই যুক্তি উপস্থাপন। এ সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন প্রদীপ কুমার দাশসহ মামলার ১৫ আসামি। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে জেলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে আসামিদের আদালতে আনা হয়।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি (টেকনাফে দুটি, রামুতে একটি) মামলা করে।
ঘটনার পাঁচ দিন পর ৫ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে টেকনাফ থানার বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ, বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ পুলিশের ৯ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। চারটি মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় র্যাব।
২০২০ সালের ১৩ ডিসেম্বর প্রদীপ কুমার দাশসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও র্যাব-১৫ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম।