সাভারে চার প্রাণ কেড়ে নেওয়া বাসটির রুট পারমিট, ফিটনেস কিছুই ছিল না

ঢাকার অদূরে সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় পরমাণু শক্তি কমিশনের কর্মকর্তাসহ চারজন নিহত হয়েছেন
ছবি: প্রথম আলো

ঢাকার অদূরে সাভারের বলিয়ারপুরে গতকাল রোববার যে বাসের ধাক্কায় চারজন নিহত হয়েছেন, সেটির সড়কে চলাচলের অনুমতি বা রুট পারমিট, ফিটনেস ও ট্যাক্সের মেয়াদ ছিল না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। অবৈধ এ বাসের আকস্মিক ধাক্কায় বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের স্টাফ বাসে থাকা দুজন বিজ্ঞানী, একজন প্রকৌশলী ও বাসটির চালক নিহত হয়েছেন।

বিআরটিএর সাভার কার্যালয়ের কর্মকর্তারা জানান, বলিয়ারপুরে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী সেইফ লাইন নামের বাসটির রেজিস্ট্রেশন নম্বর ঢাকা মেট্টো-ব-১৪-৫৮৭৮। বিআরটিএর কাছে থাকা তথ্য অনুসারে বাসটির সড়কে চলাচলের অনুমতি (রোড পারমিট) নেই। এ ছাড়া বাসটির ফিটনেসের মেয়াদ ২০১৪ সালের ১৬ জুলাই এবং ট্যাক্সের মেয়াদ ২০১৫ সালের ২৪ মে শেষ হয়েছে।

সাভার বিআরটিএর পরিদর্শক মো. সাজ্জাদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাসটির ফিটনেস ও ট্যাক্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে বেশ কয়েক বছর আগেই। বাসটির কোনো রুট পারমিট নেই। তিনি বলেন, বাসের চালককে গ্রেপ্তার করা গেলে মালিকসহ অন্যান্য তথ্য বের করা যাবে।

গতকালের এ দুর্ঘটনায় সাভার হাইওয়ে থানা–পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. ফজলুল হক বাদী হয়ে রাতেই সাভার মডেল থানায় বাসটির চালকের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইনে মামলা করেন।

সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী মাইনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রাথমিকভাবে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী বাসটিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। চালককে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। সাভার হাইওয়ে থানা–পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

ঢাকা জেলা ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা প্রতিনিয়তই লাইসেন্সবিহীন চালক, রোড পারমিট নেই, ফিটনেস ও ট্যাক্সের মেয়াদ নেই—এমন যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। এ ছাড়া বিআরটিএ তাদের নিজস্ব জনবল দিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। সড়কে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় অকালে প্রাণ ঝরে যাবে এটি কখনোই কাম্য নয়। দ্রুতই আমরা কঠোর অভিযান পরিচালনা করব।’

গতকাল সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনে গরুবোঝাই একটি ট্রাক ও সেইফ লাইন নামে একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। সেইফ লাইন পরিবহনের বাসটি চলন্ত অবস্থায় আকস্মিকভাবে প্রথমে তাঁর বাঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসকে ধাক্কা দেয়। এরপর ডান পাশে থাকা গরুবোঝাই ট্রাকটিকে সামনের দিকে ধাক্কা দিয়ে সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে বিপরীত লেনে থাকা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের দুজন বিজ্ঞানী, একজন প্রকৌশলী ও স্টাফ বাসের চালক নিহত হন। এ ছাড়া আহত হন আরও ১৫-২০ জন।