বরিশালের গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের হোসনাবাদ বাজারে এক ব্যক্তি তাঁর সাবেক শ্বশুর হারুন মৃধাকে (৬০) পিটিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার পাঁচজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছে। পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত হারুন বরিশালের মুলাদী উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের খেয়াঘাটের মাঝি। স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানায়, হারুন মৃধার মেয়ের সঙ্গে এক বছর আগে গৌরনদী উপজেলার হোসনাবাদ গ্রামের সেকেম আলী বয়াতির ছেলে মাসুম বয়াতির (২৮) বিয়ে হয়। বিয়ের পরে কিছু দিন না যেতেই মাসুম যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে মারধর করত। এর জের ধরে গত ১৬ মার্চ তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলছিল।
নিহত হারুন মৃধার পরিবারের সদস্যরা বলেন, গত সোমবার মাসুম বয়াতির সাবেক স্ত্রী স্কুল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে বেলা দেড়টার দিকে হোসনাবাদ বাজারে পৌঁছালে মাসুম বয়াতি ও তাঁর ছোট ভাই হান্নান বয়াতিসহ (২৪) চার-পাঁচজন সহযোগী তাঁকে আটকান। একপর্যায়ে তাঁরা তাকে অপহরণ করার চেষ্টা করেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন ওই মেয়েকে উদ্ধার করে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন এবং বাবা হারুন মৃধাকে হোসনাবাদ বাজারে আসতে বলেন। হারুন মৃধা খবর পেয়ে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে গৌরনদীর হোসনাবাদ বাজারে পৌঁছালে মাসুম বয়াতির নেতৃত্বে চার-পাঁচজন তাঁকে মারধর করে গুরুতরভাবে আহত করেন। স্বজনেরা খবর পেয়ে বিকেল ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে হারুন মৃধাকে উদ্ধার করে একটি ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত হারুন মৃধার ছোট ভাই স্বপন মৃধা বলেন, বিচ্ছেদ নিয়ে বিবাদ চলায় বুধবার তাঁদের সালিসি বৈঠকে বসার কথা ছিল। কিন্তু এর আগেই তাঁর ভাইকে প্রকাশ্যে দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে মাসুম বয়াতির কাছে একাধিকবার ফোন করলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। গ্রামের লোকজন বলেন, হারুন মৃধা নিহত হওয়ার খবর পাওয়ার পরে মাসুম বয়াতি ও তাঁর পরিবারের লোকজন গা–ঢাকা দিয়েছেন।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আফজাল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে হারুন মৃধার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য আজ বরিশালের শের–ই–বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। একই দিন নিহত হারুন মৃধার বড় ছেলে মিরাজ মৃধা বাদী হয়ে মাসুম বয়াতি ও হান্নান বয়াতির নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।