গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর উপজেলা সদরে ঘাঘট নদে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ঘাঘট সেতু ও প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় সদ্য নির্মিত সাতটি বাড়ি।
লাভলু মিয়া ও রাজু মিয়াসহ একটি চক্র স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দুই সপ্তাহ ধরে এই বালু উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। একাধিকবার বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও তারা এখনো কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদরের সরকারি ডিগ্রি কলেজসংলগ্ন খেয়াঘাটে নির্মিত সড়ক ও জনপদের ঘাঘট সেতু থেকে ৩০০ গজ দক্ষিণে এবং প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় সদ্য নির্মিত ‘স্বপ্ননীড়’–এর ৭টি বাড়ির ২০০ গজ পূর্বে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত মেশিন বসিয়ে ঘাঘট নদ থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
উত্তোলন করা এসব বালু পাইপলাইন দিয়ে সাদুল্লাপুর থানার (পুলিশ স্টেশনের) পেছনে নিয়ে ইউনুস আলী তাঁর পুকুর ভরাট করছেন। ফলে নদের পূর্ব পাড়ে বিশাল এলাকা ধসে পড়ে বিশাল খাদের সৃষ্টি হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় নির্মিত সেমি পাকা বাড়ি উপহার পাওয়া সাতটি পরিবারের নতুন ঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এসব ঘরে উঠতে না উঠতে সুবিধাভোগীরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেলেও সেটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।জলিল মিয়া, স্বপ্ননীড়ে আশ্রয় পাওয়া খামারবাগচি গ্রামের বাসিন্দা
স্বপ্ননীড়ে আশ্রয় পাওয়া উপজেলার খামারবাগচি গ্রামের জলিল মিয়া বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঘর পেলেও সেটি ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। খামারবাগচি গ্রামের ব্যবসায়ী আবুল কাশেম বলেন, শুধু সেতু আর প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২–এর আওতায় নির্মিত স্বপ্ননীড়ের সাতটি বাড়িই নয়, এই বালু উত্তোলনে খামারবাগচি ও পুরান লক্ষ্মীপুর গ্রাম দুটি এখন হুমকির মুখে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, লাভলু মিয়া ও রাজু মিয়াসহ একটি চক্র ম্যানেজ করে এই বালু উত্তোলন করছেন। বিষয়টি প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলে জানিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না।
ইউএনও মো. নবীনেওয়াজ জানান, এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য থানা–পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গাইবান্ধা সড়ক ও জনপদের (সওজ) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. আফজালুল হক জানান, বিষয়টি তাঁদের জানা নাই। তবে দ্রুত পরিদর্শনপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত লাভলু ও রাজু বলেন, ‘সরকারি নদ থেকে আমরা বালু তুলছি। কেউ আমাদের বাধা দেয়নি। প্রশাসন বললে বালু তোলা বন্ধ করব।’