সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলার সাক্ষী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মুনসুর আহমেদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। সাতক্ষীরা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হুমায়ূন কবিরের আদালতে আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করা হয়। এ নিয়ে এ মামলায় ১০ জনের সাক্ষী গ্রহণ করা হলো। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে লিভ টু আপিল শুনানির জন্য দিন ধার্য হওয়ায় আজ সাক্ষী জেরা করেননি আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবদুল লতিফ জানান, মামলার ৩০ সাক্ষীর মধ্যে ১০ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুনসুর আহমেদকে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে উপস্থাপন করে আজ। তাঁর জবানবন্দি গ্রহণ করেন আদালত। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। আগামী রোববার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য নতুন করে দিন ধার্য করা হয়েছে।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়।
সাতক্ষীরা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আমল রায় ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে যান। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে সড়কপথে ঢাকায় ফিরছিলেন শেখ হাসিনা। পথে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলারোয়া বিএনপি অফিসের সামনে তাঁর গাড়িবহরে হামলা হয়। হামলাকারীরা শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি করে ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান শেখ হাসিনা। এ সময় গাড়িবহরে থাকা ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
তৎকালীন সাতক্ষীরা-১ আসনের সাংসদ হাবিবুল ইসলাম ও তাঁর নেতা-কর্মীরা এ হামলার পেছনে ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দীন বাদী হয়ে যুবদলের সভাপতি আশরাফ হোসেনসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয়ে ৭০-৭৫ জনকে আসামি করে কলারোয়া থানায় মামলা করতে গেলে মামলাটি রেকর্ড করেনি পুলিশ। এ ঘটনার ১২ বছর পর ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর সাতক্ষীরা আদালতে একটি মামলা করা হয়। আদালত কলারোয়া থানায় মামলাটি রেকর্ড করার আদেশ দেন।
মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরকদ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিন ভাগে আদালতে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এতে সাক্ষী করা হয় ৩০ জনকে। তবে ৯ জনের সাক্ষ্য নেওয়ার পর ২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর উচ্চ আদালতে আসামিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি স্থগিত করা হয়। হাইকোর্ট মামলাটির স্থগিতাদেশ দেওয়ায় সাতক্ষীরার নিম্ন আদালতে গত তিন বছর বন্ধ হয়ে ছিল মামলাটির বিচারকাজ। এরপর রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চতর আদালত চলতি বছরের ২২ অক্টোবর মামলাটির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নথি পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে নির্দেশ দেন।