সাতক্ষীরায় টানা ২৮ দিন লকডাউন চলছে। কিন্তু করোনার সংক্রমণ কমছে না। শনাক্তের হার ওঠানামা করছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও চারজন মারা গেছেন। একই সময় ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আজ জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা জয়ন্ত সরকার জানান, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা থেকে শুক্রবার রাত আটটা পর্যন্ত করোনা ডেডিকেটেড সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩৫৪ জনের মৃত্যু হলো। আর এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৭৪ জন। ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর আগের দিন ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। শনাক্তের হার ছিল ৪৯ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। যদিও এ হার আগের ২৪ ঘণ্টার চেয়ে ১০ দশমিক ২৮ শতাংশ কম। এভাবে প্রতিদিনই শনাক্তের হার ওঠানামা করছে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা জয়ন্ত সরকার আরও বলেন, জেলায় এ পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৩ হাজার ৪৭২ জন করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫৮৮ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতাল ও বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৮১৮ জন।
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক কুদরত-ই-খোদা জানান, হাসপাতালে শয্যা ও লোকবল সংকটের কারণে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিনই রোগী বাড়ছে। ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আজ সকালে রোগী ছিল ২৭৯ জন। এর মধ্যে ২২ জন করোনা রোগী।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন গত ৫ জুন থেকে সাত দিনের লকডাউন দেয়। এরপর করোনার সংক্রমণ না কমায় তিন দফা লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হয়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির জানান, মানুষ যাতে অহেতুক বাইরে আসতে না পারে, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মানার অপরাধে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ হাজার ৬০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
সারা দেশের মতো সাতক্ষীরা জেলায় সর্বাত্মক লকডাউন চলছে। জেলা শহরের বেশির ভাগ দোকান বন্ধ। কিছু কিছু দোকান খোলা রেখে ব্যবসায়ীরা দোকানের সামনে পাহারাদার বসিয়ে রেখেছেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি আসার শব্দ পেলেই তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। আবার গাড়ি চলে গেলে দোকানগুলো খোলা হচ্ছে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।