নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলায় এক ইটভাটার মালিককে পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর দূষণের দায়ে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৫) নামের ওই ব্যক্তিকে এই সাজা দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসন পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত। এক মাস সাজা খাটার পর জামিনে মুক্তি পেয়ে এলাকায় পৌঁছালে তাঁকে গলায় টাকা, মালাসহ ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ এলাকায় পৌঁছার পর তাঁকে এই ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কর্মী-সমর্থকেরা তাঁর গলায় টাকা, মালাসহ ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়ার কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেন। পরে তা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকাসহ আশপাশের লোকজনের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এর আগে বিকেলে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে তিনি জামিনে মুক্তি পান।
আবদুল্লাহ আল মামুন রায়পুরার চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকার মৃত রবিউল্লার ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক মাস আগে গত ৮ ডিসেম্বর অভিযান চালিয়ে মামুন ব্রিক ফিল্ডের মালিক আবদুল্লাহ আল মামুনকে দুই মাসের সাজা দেওয়া হয়। ওই ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. শাহরুখ খান। ব্রিক ফিল্ডটির অবস্থান রায়পুরার চাঁনপুর ইউনিয়নের মাঝের চর এলাকায়।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) মো. শাহরুখ খান জানান, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর দূষণের দায়ে ওই ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালানো হয়েছিল। অভিযানের সময় মামুন ব্রিক ফিল্ডের লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকায় ভাটার মালিককে ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ (স্থাপন) আইন–২০১৩ অনুযায়ী দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে চরাঞ্চলে ভেকু মেশিন নিয়ে যেতে না পারায় ওই ইটভাটা ভেঙে দেওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, আবদুল্লাহ আল মামুন তো রাজনৈতিক কারণে কারাগারে ছিলেন না, সাজা ভোগ করেছেন ইটভাটার মাধ্যমে পরিবেশদূষণের দায়ে। এ ঘটনায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তাঁর গলায় টাকা ও ফুলের মালা পরিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর কারণ কেউই বুঝতে পারছেন না। বিষয়টি এলাকায় হাসির খোরাক হয়েছে।
জানতে চাইলে আবদুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘গতকাল বিকেলে জেলা কারাগার থেকে আমি জামিনে মুক্ত হয়েছি। এক মাস পর এলাকায় ফিরেছি, তাই আমার কর্মী–সমর্থক ও এলাকাবাসী আমাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এতে আমি দোষের কিছু দেখি না।’