‘পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা অবহেলিত’—উক্তিটি ঘিরে হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার তাঁকে গালিগালাজ ও তেড়ে আসার অভিযোগে গতকাল বুধবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে মামলা করেছেন। আদালতের বিচারক তাহমিনা আখতার মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা কার্যালয়ে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির একটি সভা ২২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মতিউর রহমান খানের সভাপতিত্বে এ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান। সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার বলেন, ‘পুরুষশাসিত সমাজে নারীরা অবহেলিত।’ এ কথার পরপরই উপজেলা চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি করেন। এ নিয়ে সভাস্থলে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে চেয়ারম্যান ওই মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানের দিকে তেড়ে যান। এ সময় সভায় উপস্থিত অন্যরা তাঁকে থামান। এ নিয়ে ওই দিনকার সভা প্রায় পণ্ড হয়ে যায়।
এ ঘটনায় লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ এনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সীমা রানী সরকার গত বুধবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা করেছেন। আদালতের বিচারক তাহমিনা আখতার মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।
সীমা রানী সরকার বলেন, চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান তাঁকে সভায় মারধর করতে তেড়ে যান এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন তাঁকে রক্ষা করেন। এ কারণে তিনি আদালতে মামলা করেছেন।
তবে চেয়ারম্যান মর্তুজা হাসান বলেন, তিনি নিয়মতান্ত্রিকভাবে ভাইস চেয়ারম্যানকে বলেছিলেন যে আপত্তিকর বক্তব্য রেখেছেন, তা প্রত্যাহারের জন্য। তাঁকে তেড়ে যাওয়ার বা গালিগালাজের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এলাকার একটি চক্র বিষয়টিকে নিয়ে রাজনীতি করছে। তারাই ভাইস চেয়ারম্যানকে দিয়ে এ মামলা করিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মতিউর রহমান খান বলেন, সভায় অনাকাঙ্ক্ষিত ও আকস্মিকভাবে ঘটনাটি ঘটে। সভায় উভয় পক্ষ স্থানীয় ভাষায় কথা–কাটাকাটি করায় তিনি গালিগালাজের বিষয়টি আঁচ করতে পারেননি।