ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে স্বামীকে খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তাঁর স্ত্রী। গতকাল বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আল আমিনের আদালতে ওই নারী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ওই নারীর নাম হেলেনা বেগম (৫২)। তিনি নিহত জামাল উদ্দিনের (৫৫) প্রথম স্ত্রী। স্বামীর ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে খুন করে লাশ গুম করেছিলেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। জামাল উদ্দিনের বাড়ি সরাইল উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের লোপাড়া গ্রামে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, ২৮ বছর আগে জামাল ও হেলেনার বিয়ে হয়। সংসারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রায়ই তাঁদের ঝগড়া হতো। জামাল তাঁর স্ত্রীকে মারধর করতেন এবং কথায় কথায় স্ত্রীকে তালাকের হুমকি দিতেন। পরে জামাল দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তবে দাম্পত্য কলহের কারণে সেই বিয়ে টেকেনি।
গত শনিবার বিকেল থেকে জামাল নিখোঁজ। পরদিন সন্ধ্যায় হেলেনা স্বামীর নিখোঁজের ব্যাপারে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। সোমবার বিকেলে পুলিশ বাড়ির পাশের একটি ডোবা থেকে জামালের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর থেকে হেলেনা তাঁর স্বামীর খুনের জন্য দেবর-ভাশুরসহ গ্রামের একাধিক ব্যক্তিকে দায়ী করতে থাকেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হেলেনা বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে যান। এ সময় হেলেনার কথাবার্তায় সন্দেহ হয় পুলিশের। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেন।
এদিকে ওই রাতে জামালের মেয়ে সুরাইয়া বেগম (২০) বাদী হয়ে মায়ের বিরুদ্ধে বাবাকে হত্যার অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশকে হেলেনা বলেন, ‘এতডি বাচ্ছা হওয়ার ফরও কথায় কথায় মারধর করে, তালাক দেওয়ার কথা কই। আমি তাঁর অত্যাচারে শেষ অইয়া গেছি। ওই রাইতে আমি তাঁকে মারছি। পরে আমি ডরে থানায় জিডি করছি।’
সরাইল থানার ওসি আসলাম হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিনের পারিবারিক কলহের জেরে হেলেনা বেগম তাঁর স্বামীকে খুন করেন বলে আদালতে স্বীকার করেছেন। তিনি স্বামীর ওপর নানা কারণে ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারগারে পাঠানো হয়েছে।’