গতকাল বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ১০টা। সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার দৌলতপুরের একটি গ্রামে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল। মেয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকেরা অনেকটা চুপিসারেই বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন। গোপনে এ খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিসুর রহমান কনের বাড়িতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালিয়ে এ বাল্যবিবাহের আয়োজন বন্ধ করে দিয়েছেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিয়েবাড়িতে উপস্থিত হয়ে কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক এ খবরের সত্যতা পান ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমান। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে বলছে স্বীকার করেন অভিভাবকেরা। বর পাশের গ্রামের বাসিন্দা ও পেশায় তাঁতশ্রমিক (২৫)। কিশোরী মেয়ের বাল্যবিবাহের আয়োজন করার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত কনের বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় কনের বাবাকে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বোঝানো হলে তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পারেন। মেয়ের বয়স ১৮ বছর না হওয়া পর্যন্ত বিয়ে দেবেন না বলে তিনি মুচলেকা দেন।
গত ছয় মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮২টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালতকে সহায়তা করেন পেশকার মো. হাফিজ উদ্দিন ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা।
রাতে অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে আজ শুক্রবার বিকেলে ইউএনও আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গত ছয় মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮২টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। বেলকুচি উপজেলাকে বাল্যবিবাহমুক্ত করতে তিনি সংশ্লিষ্ট সবার, বিশেষ করে মা–বাবা ও জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা কামনা করেন।