গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার নিজমাওনা গ্রামের সচ্ছল চার সন্তানের জনক মাহমুদ আলী (৯০)। জীবনের শেষ পর্যায়ে এসে মাটির ঘরের স্যাঁতসেঁতে মেঝেতে স্থান হয়েছে তাঁর। বয়সজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকলেও ছেলেরা তাঁর খোঁজ নেন না। একই অবস্থা বৃদ্ধের স্ত্রী ও বয়োজ্যেষ্ঠ এক মেয়ের ক্ষেত্রেও।
খবর পেয়ে সোমবার এই বৃদ্ধের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমাতুজ জোহরা।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মাহমুদ আলীর চার ছেলের মধ্যে সবাই সচ্ছল। দুজন ব্যবসায়ী, একজন মসজিদের ইমাম আর অপর একজন প্রবাসী ছিলেন। মাহমুদ আলী তাঁর স্ত্রী ও অসুস্থ এক মেয়েকে নিয়ে মাটির ঘরে মানবেতর দিনাতিপাত করছেন। খাবার জোগাতে স্ত্রী মাঝেমধ্যে ভিক্ষা করেন। ছেলেদের মধ্যে সবারই ইট-কাঠের বাড়ি আছে। বসতিও বাবার মাটির ঘরের আশপাশেই।
এ বিষয়ে মাহমুদ আলীর ছেলেরা গণমাধ্যমে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
ইউএনও ফাতেমাতুজ জোহরা প্রথম আলোকে বলেন, বয়োবৃদ্ধ মানুষটিকে দেখে যে–কারও চোখে পানি চলে আসবে। খবর পেয়ে তাঁর জামাকাপড়, বিছানাপত্র ও খাদ্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কিছু অনুদান দেওয়া হয়। বয়স্ক ভাতা দিতে তাঁর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে তাঁর চিকিৎসা শুরু করা হয়েছে। তাঁর খোঁজখবর রাখার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ফাতেমাতুজ জোহরা আরও বলেন, ছেলেরা খোঁজ না নেওয়ার বিষয়ে বৃদ্ধের পক্ষে স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউএনও বরাবর আবেদন করবেন। পরবর্তী সময়ে প্রচলিত আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।