সখীপুরে বজ্রপাত প্রতিরোধে তরুণদের উদ্যোগে ৫ হাজার তালবীজ রোপণ

গ্রামের সড়কে ঘুরে ঘুরে তালবীজ রোপণ করছেন তরুণেরা। সম্প্রতি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামে
ছবি: সংগৃহীত

বজ্রপাত প্রতিরোধ ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় টাঙ্গাইলের সখীপুরে এক মাসে পাঁচ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন একদল তরুণ। উপজেলার বেতুয়া গ্রাম ও তার আশপাশের এলাকার দুটি সড়কের দুই পাশে এসব তালবীজ রোপণ করা হয়।

এই তালবীজ রোপণের উদ্যোক্তা বেতুয়া গ্রামের আতাউল মাহমুদ। তিনি গ্রামের তরুণদের নিয়ে গত ১৬ সেপ্টেম্বর গ্রামের শালগ্রামপুর-কালিয়ান সড়কে দুই হাজার তালবীজ রোপণ করার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার চার ধাপে পাঁচ হাজার তালবীজ রোপণের কাজ শেষ হয়। আতাউল আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য। তিনি বুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক।

আতাউল মাহমুদ বলেন, প্রথম আলো পত্রিকায় ছাপা হওয়া খবরের তথ্যমতে, দেশে গত ১১ বছরে বজ্রপাতে ২ হাজার ৮০০ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পর্যবেক্ষণ—যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগই খোলা মাঠ ও হাওরের মধ্যে কৃষিকাজ করছিলেন। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু তিনি চান না। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ বজ্রপাত প্রতিরোধে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় তিনি ব্যক্তি উদ্যোগে নিজ এলাকার কয়েকটি গ্রামের সড়কে ও নদীর ধারে পাঁচ হাজার তালবীজ রোপণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি গ্রামের ১০-১২ তরুণকে সঙ্গে নিয়ে ১ মাসে ৫ হাজার তালবীজ রোপণ করেছেন। আগামী বছর আরও পাঁচ হাজার তালবীজ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁর।

বেতুয়া গ্রামের তাহমিদ সোহেল নামের এক তরুণ এ কাজের সমন্বয়ক ছিলেন। কলেজপড়ুয়া তাহমিদ প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে তাঁরা তিন হাজার তালবীজ সংগ্রহ করেন। আরও দুই হাজার বীজ কেনা হয়েছে।

তরুণ তারেক রানা বলেন, উপজেলার শালগ্রামপুর থেকে বেতুয়া হয়ে কালিয়ান সেতু পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে তিন হাজার এবং শালগ্রামপুর-বহেড়াতৈল পর্যন্ত টঙ্কী নদীর দুই ধারে দুই হাজার তালবীজ রোপণ করা হয়েছে।

কয়েকটি গ্রামের সড়কে ও নদীর ধারে পাঁচ হাজার তালবীজ রোপণ করা হয়। সম্প্রতি টাঙ্গাইলসের সখীপুরে

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চিত্রা শিকারী প্রথম আলোকে বলেন, তালগাছ অনেক উঁচু হওয়ায় বজ্রাঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া মাটির ক্ষয় রোধ ও প্রাকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় তালগাছের জুড়ি নেই। এমন উপকারী গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে তালবীজ রোপণের এ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য আতাউল মাহমুদকে ধন্যবাদ। তাঁর মতো সবাই উদ্যোগী হলে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করা যাবে এবং দেশটি অনেক এগিয়ে যাবে।