গাজীপুরের শ্রীপুর-কাপাসিয়া আঞ্চলিক সড়কের একটি অংশ ভেঙে গেছে। এতে এই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। দ্রুত সংস্কার করার উদ্যোগ না নিলে এই সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্রীপুর-কাপাসিয়া সড়কের দৈর্ঘ্য সাত কিলোমিটার। শ্রীপুর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে বাউনী বাজারের পাশে সড়কের একটি অংশ ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে সড়কটির বাউনী বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে সড়কের দুই পাশ থেকে ভেঙে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দুই পাশের গর্তের বাইরে যান চলাচলের জন্য অল্প একটু জায়গা আছে। দুর্ঘটনা এড়াতে স্থানীয় লোকজন ওই স্থানে লাল কাপড়ের পতাকা টাঙিয়ে দিয়েছেন। এই সড়ক দিয়ে শ্রীপুর ও কাপাসিয়া উপজেলার হাজার হাজার মানুষ বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করে। ভাঙা অংশে এসে যানবাহনগুলো খুব সতর্কভাবে চলে। লাল পতাকা না দেখলে যে কেউ এখানে এসে দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। ভাঙনকবলিত ওই অংশের পাশেই বাউনী বাজার।
ওই অংশ সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শিগগির কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি।মাসুদুল ইসলাম, উপসহকারী প্রকৌশলী, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, শ্রীপুর
শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি এলাকার খোরশেদ আলম বলেন, ‘শিশুদের নিয়ে ব্যক্তিগত গাড়িতে ঘুরতে বেরিয়েছিলাম। এখানে এসে ভাঙন দেখে অবাক হয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে এত বড় গর্ত থাকাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।’
কাপাসিয়াগামী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক মো. শরিফুল জানান, তিনি প্রায়ই এই সড়কে চলাচল করেন। সড়কের এই অংশে এসে খুব সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হয়। গত আগস্ট মাসে এখানে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পড়ে গিয়েছিল। তবে এতে কেউ আহত হয়নি। তিনি আরও বলেন, দুটি উপজেলার সংযোগ–সড়ক এটি। ফলে সড়কের ঝুঁকিপূর্ণ এই অংশ দ্রুত মেরামত করা দরকার।
কাপাসিয়া থেকে শ্রীপুরগামী ইয়াকুব আলী বলেন, সড়কটির প্রায় সম্পূর্ণই ভালো। শুধু এখানে এলেই বিপদ। ব্যক্তিগত গাড়িসহ অন্যান্য যানবাহন খুব ঝুঁকি নিয়ে এই অংশ দিয়ে চলাচল করে। অতি দ্রুত এ সমস্যার সমাধান করা দরকার।
অটোরিকশাচালক আবদুস সালাম বলেন, সড়কের এই ঝুঁকিপূর্ণ অংশ অতিক্রম করতে খুব ভয় লাগে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর এখানে দুর্ঘটনার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। লাল পতাকা অনেক সময় দেখা যায় না। এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম নামের অপর এক অটোরিকশাচালক বলেন, সড়কের এই অংশে বড় কোনো গাড়ি ঢুকতে পারে না। ছোট গাড়িগুলোকে খুব ভয় নিয়ে চলতে হয়।
বাউনী বাজারের কয়েকজন বলেন, সড়কের যে জায়গায় এখন বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে, সেখানে একটি পানিনিষ্কাশনের নালা আছে। সড়কের উত্তর দিকের জমির পানি ওই নালা দিয়ে দক্ষিণের খালে নামে। পানি প্রবাহের কারণে নিচের মাটি সরে গিয়ে সড়কের ওই অংশ ধীরে ধীরে ভেঙে গেছে। এখন সেখানে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
বাউনী বাজারের লোকজন জানান, সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে সৃষ্টি হওয়া গর্ত প্রতিদিনই বড় হচ্ছে। এভাবে বাড়তে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই খুব দ্রুত এই অংশ সংস্কার করা দরকার। তাঁরা আরও বলেন, তিন-চার মাস ধরেই সড়ক ভাঙছে। প্রতিনিয়ত গর্ত বড় হচ্ছে। এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটেছে। বিশেষ করে রাতে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেশি থাকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শ্রীপুর উপজেলা কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই অংশ সংস্কারের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। শিগগির কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করছি।’