চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলায় বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে আন্দোলনে নামা একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। আজ সোমবার সকালে উপজেলার কালুরঘাট এলাকার রিজেন্ট টেক্সটাইল কারখানায় এ ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ১০ শ্রমিক ও ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষের জেরে আরাকান সড়কের বোয়ালখালী অংশে অবরোধ করেন শ্রমিকেরা। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। শ্রমিকেরা আগুন জ্বালিয়ে, বাঁশ ফেলে সড়ক অবরোধ করে রাখেন। শ্রমিকদের অবরোধের কারণে এ সময় কালুরঘাট সেতুতে গাড়ি চলাচল করেনি। এ সময় লোকজনকে হেঁটে সেতু পার হতে দেখা যায়। কারও কারও হাতে ব্যাগ ছিল। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েন এলাকার বাসিন্দারা।
লাকী শীল নামের এক স্কুলশিক্ষক বলেন, সকালে নগরের বাসা থেকে বের হয়ে বোয়ালখালীতে স্কুলের উদ্দেশে রওনা দেন। কিন্তু কালুরঘাট সেতুর নগর প্রান্তে এসে গাড়ি থেকে নেমে যেতে হয়। কেননা শ্রমিকদের অবরোধের কারণে সেতুর ওপর গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। পরে হেঁটেই সেতু পার হন তিনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, এই পোশাক কারখানার শ্রমিকদের প্রায় দুই মাসের বেতন-ভাতা না দিয়ে গত ১৬ মার্চ কারখানা বন্ধ করে দেয় মালিকপক্ষ। এরপর আন্দোলনে নামেন শ্রমিকেরা। ২০ মার্চ বেতন-ভাতা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেওয়া হয়নি। পরে ৩ এপ্রিল বেতন-ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়। সে আশ্বাসও রাখেনি মালিকপক্ষ।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা আজ সকাল ৮টায় কারখানা এলাকায় জড়ো হন। তখন কারাখানার গেট বন্ধ করে রাখা হয়। পরে ১০টার দিকে শ্রমিকেরা কারখানায় ঢুকতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এরপর শ্রমিকেরা সড়ক অবরোধ করেন। থেমে থেমে বেশ কিছুক্ষণ সংঘর্ষ চলে পুলিশের সঙ্গে। এতে শ্রমিক ও পুলিশ আহত হন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল করিম আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। তবে এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
কারখানার মালিকপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বেতন-ভাতা না দিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। মালিকপক্ষকে খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। শ্রমিকদের বেতন-ভাতার বিষয়টি সমাধান করা হবে।