সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের পাথারিয়াকান্দা গ্রামের পশ্চিমে শ্মশানঘাট নির্মাণকে কেন্দ্র করে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ও তাঁর লোকজনের হামলায় ওই গ্রামের সংখ্যালঘু পরিবারের চারজন আহত হন। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আসাদুল মিয়া (৩৭) নামের এক যুবককে সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে আটক করা হয়েছে।
আসাদুল ওই ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলামের ছোট ভাই। তাঁর বাড়ি নোয়াগাঁও নতুনপাড়া গ্রামে। এর আগে গত রোববার রাতে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
ধরমপাশা থানা-পুলিশ ও এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহখানেক ধরে উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও নতুনপাড়া ও পাথারিয়াকান্দা গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শেষ কৃত্যানুষ্ঠানের জন্য একটি শ্মশানঘাট নির্মাণের কাজ চলছে। মরদেহ দাহ করার গন্ধ ছড়ানোসহ নানা কারণ দেখিয়ে এই শ্মশানঘাট নির্মাণকাজে বাধা দিচ্ছিলেন একই ইউনিয়নের নোয়াগাঁও নতুনপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আজিজুল ইসলাম। শ্মশানঘাট নির্মাণের জন্য সেখানে রাখা রড, বালু, ইট ও পাথর চুরি হতে পারে এই আশঙ্কায় স্থানীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন রাতের বেলায় এসব পাহারা দিচ্ছিলেন। রোববার রাতে পাথারিয়াকান্দা গ্রামের রবি বর্মন (৫০), অমল বর্মন (২০), দীপ্ত বর্মন (২০), সুবল বর্মন (২০) শ্মশানঘাটের মালামাল পাহারার কাজে নিয়োজিত ছিলেন। রাত একটার দিকে ইউপি সদস্য আজিজুলের (৪৫) নেতৃত্বে তাঁর আপন ছোট ভাই আসাদুল মিয়াসহ ৫/৬ জন লোক শ্মশানঘাটের মালামাল পাহারার কাজে নিয়োজিত থাকা লোকজনদের ওপর হামলা চালিয়ে পিটিয়ে আহত করেন। আহতদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আজিজুল তাঁর লোকজন নিয়ে চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন আহত ওই চারজনকে সেখান থেকে উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন।
খবর পেয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান, ধরমপাশা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুজন চন্দ্র সরকার, ওসি মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ইউপি সদস্য আজিজুলের মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ বিষয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ধরমপাশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন সোমবার রাত নয়টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শ্মশানঘাট নির্মাণকে কেন্দ্র করে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইউপি সদস্য আজিজুলের ছোট ভাই আসাদুল মিয়াকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।