সিলেট সদর উপজেলায় শৌচাগার থেকে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তাঁর লাশ উদ্ধার করা হয়। ওই গৃহবধূর নাম নাজমিন বেগম (২০)। তিনি সদর উপজেলার রায়েরগাঁও গ্রামের আবদুস সাত্তারের মেয়ে। তবে নাজমিনের মা–বাবার দাবি, যৌতুকের দাবিতে তাঁদের মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূ নাজমিনের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি মইয়ারচর গ্রামের নাঈম উদ্দিনের সঙ্গে নাজমিনে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে নাঈমসহ তাঁর পরিবারের লোকজন যৌতুকের জন্য নাজমিনকে চাপ দিয়ে আসছিলেন। ঈদুল ফিতরের পর নাজমিন বেগমকে তাঁর বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
বাবার বাড়ি থেকে ফেরার সময় নাজমিনকে এক লাখ টাকা নিয়ে আসতে বলেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গতকাল বিকেলে নাজমিনকে তাঁর মা–বাবা ও ভাই শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে আসেন। ওই সময় টাকা না নিয়ে আসায় নাজমিনকে একটি কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ সময় নাজমিনের মা–বাবা ওই বাড়িতেই ছিলেন।
দীর্ঘক্ষণ মেয়েকে না দেখতে পেয়ে তাঁর মা–বাবা তাঁকে খুঁজতে থাকেন। ঘণ্টাখানেক পর তাঁরা ওই বাড়ির শৌচাগার থেকে নাজমিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে নাজমিনকে তাঁর মা–বাবা ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ায় পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে এসে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য একই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহত নাজমিনের ভাই মিজান আহমদ বলেন, বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নাজমিনকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। গতকাল টাকা নিয়ে না যাওয়ায় তাঁর বোনকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা খান বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধারের পর আজ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত নাজমিনের পরিবারের সদস্যরা এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগের পর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।