রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

শেষ কর্মদিবসেও ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত উপাচার্য কলিমউল্লাহ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর বিরুদ্ধে শিক্ষক–শিক্ষার্থীদের প্রধান অভিযোগ ছিল, তিনি ক্যাম্পাসে আসেন না। ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিস থেকেই উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন। উপাচার্য হিসেবে আজ রোববার তাঁর শেষ কর্মদিবসে ক্যাম্পাসে আলোচনা ছিল হয়তো তিনি আসবেন। তবে শেষ দিনেও তিনি ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকলেন।

২০১৭ সালের ৩১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহকে চার বছরের জন্য নিয়োগ দেয়। সেই নিয়োগের ১ (ঘ) নম্বর শর্ত ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে তিনি সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। ১৪ জুন ২০১৭ সালে তিনি উপাচার্যের দায়িত্ব নেন। যোগদানের তারিখ থেকে হিসাব করে আজ রোববার (১৩ জুন ২০২১) তাঁর চার বছর পূর্ণ হলো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’–এর আহ্বায়ক অধ্যাপক মতিউর রহমান বলেন, উপাচার্য যোগদানের পর থেকেই অধিকাংশ দিন অনুপস্থিত থেকেছেন। উপাচার্যের দেখা না পেয়ে বিভিন্ন দাবিনামা একটি ব্যানারে লিখে উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজায়ও সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী অনেকেই ভেবেছিলেন শেষবারের মতো হলেও একটিবার তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, তাঁর কার্যালয়, বাসভবন দেখতে আসবেন। কিন্তু শেষ দিনেও তিনি অনপুস্থিতই থাকলেন।

উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে না পেয়ে একপর্যায়ে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ ক্যাম্পাসে হাজিরা খাতা স্থাপন করেছিল। সর্বশেষ ১ জুন ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের ভেতরে আবারও হাজিরা খাতা স্থাপন করা হয়। সেখানে উপাচার্যের হাজিরা নিয়ে মূল্যায়নে বলা হয়েছিল, ‘ডিসকোয়ালিফায়েড’ এবং সুপারিশ করা ছিল ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’। এ হাজিরা খাতাসূত্রে দেখা যায়, ৩১ মে পর্যন্ত উপস্থিত ছিলেন ২৪০ দিন। তাঁর মোট কার্যকাল ১ হাজার ৪৬০ দিনের মধ্যে তাঁর অনুপস্থিতি ১ হাজার ২২০ দিন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘একবার তিনি তাঁর বাসভবনে আছেন শুনে আমরা কিছু শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী তাঁর বাসার প্রধান ফটকের সামনে অপেক্ষা করছিলাম। পরে জেনেছি তিনি চলে গেছেন।’

অনুপস্থিতি নিয়ে বিদায়ী উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

উপাচার্যের একান্ত সচিব আমিনুর রহমান বলেন, ‘উপাচার্য স্যারের ক্যাম্পাসে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।’

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের অধ্যাপক মো. হাসিবুর রশীদ। আগামীকাল সোমবার (১৪ জুন) নতুন উপাচার্য হিসেবে তাঁর যোগদানের কথা রয়েছে।