শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজের ১৫ ঘণ্টা পর দুজনের লাশ উদ্ধার করেছেন স্থানীয় লোকজন।
আজ শনিবার সকালে উপজেলার দুটি পৃথক স্থান থেকে তাঁদের লাশ উদ্ধার করা হয়। ঝিনাইগাতীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আল মাসুদ প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন ঝিনাইগাতী উপজেলার সদর ইউনিয়নের বৈরাগীপাড়া গ্রামের নফজ উদ্দিনের ছেলে আশরাফ আলী (৬০) ও ধানশাইল ইউনিয়নের বাগেরভিটা গ্রামের শেখ কাদের আলীর ছেলে আবুল কালাম (৩৩)। আশরাফ আলী পেশায় কৃষক এবং আবুল কালাম রাজমিস্ত্রি ছিলেন।
এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার বিকেল পাঁচটার দিকে আশরাফ আলী অসাবধানতাবশত বন্যার পানিতে ভেসে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে আজ সকাল ছয়টার দিকে বৈরাগীপাড়া গ্রামের শেষপ্রান্তে মহারশি নদের পানিতে ভাসমান অবস্থায় স্থানীয় লোকজন তাঁর লাশ উদ্ধার করেন।
এদিকে ধানশাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে আবুল কালাম হাঁস ধরতে গিয়ে বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজ হন। পরে আজ সকাল ছয়টার দিকে বাগেরভিটা গ্রামের বিলের পানিতে আবুল কালামের লাশ ভাসতে দেখে স্বজনেরা তাঁর লাশ উদ্ধার করেন।
ইউএনও ফারুক আল মাসুদ প্রথম আলোকে বলেন, বন্যার পানিতে ভেসে নিখোঁজ দুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে সহায়তা দেওয়া হবে।
এদিকে আকস্মিক পাহাড়ি ঢলের পানিতে আটকে পড়া মহারশি নদসংলগ্ন রামেরকুড়া গ্রামের ৬টি পরিবারের ২৬ জনকে গতকাল রাতে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ঝিনাইগাতী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মী, জনপ্রতিনিধি, স্কাউট সদস্য ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকেরা অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন। ইউএনও ফারুক আল মাসুদ এসব উদ্ধার কার্যক্রমের নেতৃত্ব দেন।
শেরপুরের বন্যা পরিস্থিতি
গতকাল বেলা ২টা থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি না হওয়ায় ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের পানি উজানে কমায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে আজ সকাল থেকে ভাটিতে পানি বাড়ায় উপজেলার হাতিবান্ধা ও মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি ঢুকছে।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে মহারশি ও সোমেশ্বরী নদ–নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে গতকাল উপজেলা পরিষদ চত্বরসহ উপজেলার ২০ গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। এতে ঝিনাইগাতী সদর, কাংশা ও ধানশাইল ইউনিয়নের সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়ে। দেড় শতাধিক মৎস্য খামার, মহারশি নদের বেড়িবাঁধ ও গ্রামীণ সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।