ওয়াজ মাহফিলে ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে আলোচিত রফিকুল ইসলাম মাদানীকে (২৭) আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত আড়াইটার দিকে তাঁর গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার লেটিরকান্দা থেকে আটক করা হয়।
আজ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আকবর আলী মুন্সী। তিনি বলেন, আটক রফিকুল বর্তমানে র্যাব হেফাজতে আছেন। তাঁকে কেন আটক করা হয়েছে, তা তাঁর জানা নেই বলে তিনি জানান।
তবে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পরিচালক আ. ন. ম. ইমরান খান বলেন, রাষ্ট্রবিরোধী উসকানিমূলক ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে রফিকুল ইসলাম মাদানীকে আটকের প্রতিবাদে আজ বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ নেত্রকোনা শাখার ব্যানারে এই আয়োজন করা হয়। এ সময় আয়োজকেরা রফিকুল ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে বলেন, রফিকুল ইসলাম মাদানী এখন কোথায় আছেন, তা তাঁদের জানা নেই। তাঁকে কেন আটক করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা বলছে না। তাঁকে দ্রুত মুক্তি না দেওয়া হলে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম মাদানীর বড় ভাই রমজান মিয়া বলেন, তাঁর ভাই গতকাল মঙ্গলবার রাতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে ধর্মীয় সভা করে নিজের বাড়িতে আসেন। রাতের খাবার শেষে সবাই ঘুমিয়ে যান। রাত আড়াইটার দিকে র্যাব পরিচয়ে কিছু লোক প্রায় ১৯টি গাড়ি নিয়ে তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করে। পরে রফিকুল ইসলাম মাদানী, তাঁর বড় ভাই বকুল মিয়া (৩৭) ও তাঁর দূর সম্পর্কের ভাতিজা এনামুল হককে (২৮) তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে বকুল মিয়াকে রাতেই ছেড়ে দেওয়া হলেও অন্য দুজনের খোঁজ তাদের জানা নেই। তাঁর দাবি, রফিকুল ইসলাম মাদানীর ব্যবহৃত দুটি মুঠোফোনসহ তাঁদের পরিবারের ছয়টি মুঠোফোন জব্দ করে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলার জামিয়া ইসলামিয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুর কাইয়ুম, হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা আসাদুর রহমান আকন্দ, মাওলানা তোবাইদ কাসেমী প্রমুখ। হেফাজতের নেতারা দাবি করেন, রফিকুল ইসলাম মাদানী তাদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রফিকুল ইসলাম মাদানীরা পাঁচ ভাই। রফিকুল সবার ছোট। তাঁর বাবা মৃত শাহাবুদ্দিন। মাদানী নেত্রকোনার মালনী এলাকায় জামিয়া ইসলামিয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসায় অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে ঢাকায় চলে যান। সেখানে লেখাপড়া করার সময় ‘শিশু বক্তা’ হিসেবে আলোচিত হন।