মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ও মাদারীপুরের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি নৌপথে ঈদে ঘরমুখী যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বেড়েছে। আজ শনিবার সকাল থেকে ফেরি, লঞ্চ ও স্পিডবোটে মানুষের ঢল নামতে শুরু করেছে। এদিকে অন্য যানবাহন পারাপার হতে পারলেও পাঁচ দিন ধরে ঘাটে আটকে আছে ট্রাকের সারি।
শিমুলিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া ঘাট। ঘাট এলাকায় ১৭টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদকে সামনে রেখে ঘাট এলাকায় যাত্রী ও যানবাহনের চাপ অনেক। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আজ যানবাহনের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় ছিল ছয় শতাধিক ছোট-বড় যানবাহন। এসব যানবাহনের মধ্যে ২৫০টির বেশি মালবাহী ট্রাক আছে।
ঈগল পরিবহনের যাত্রী শাহীন আলম বলেন, ‘ভোর ছয়টায় ঘাটে এসেছি। ঘাটে অনেক যানবাহন। আমাদের গাড়ি ফেরির সিরিয়াল পায়নি।’
সাতক্ষীরাগামী প্রাইভেটকারের যাত্রী শফিকুল ইসলাম রুবেল বলেন, ‘বাড়ির সবার সঙ্গে ঈদ করব বলে ভোরেই ঢাকা থেকে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। ফেরিতে ওঠার অপেক্ষায় আছি। কখন সিরিয়াল পাব জানি না।’ তবে যে করে হোক, নদী পার হবেন বলে জানালেন তিনি।
এদিকে স্পিডবোট ও লঞ্চে যাত্রী ওঠা নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা লক্ষ করা গেছে। তবে এখন পর্যন্ত ভাড়া নিয়ে কোনো অভিযোগ ছিল না তাঁদের। নুরে আলম নামের বরিশালের এক যাত্রী বলেন, ‘লঞ্চে ভাড়া আগের মতোই নিচ্ছে। যাত্রীদের চাপ থাকায় একটু হুড়োহুড়ি করেই উঠতে হয়েছে। তবে নদী পার হয়ে বাড়ি যাব, এটা ভেবেই সব কষ্ট ভুলে গেছি।’
তবে ভোগান্তিতে ছিলেন ট্রাকচালকেরা। যশোরগামী ট্রাকচালক শাহাবউদ্দিন বলেন, ‘আজ পাঁচ দিন হলো ঘাটে এসেছি। তখন ফেরি চলাচল স্বাভাবিক ছিল। আমাদের আটকে রেখে ছোট গাড়ি পার করল। বৈরী আবহাওয়ার কারণে ফেরি বন্ধ ছিল। গত বৃহস্পতিবার ফের চলাচল শুরু হলো। আমাদের ফেরিতে উঠতে দেওয়া হলো না। শুনেছি ঈদের আগে আর আমাদের ফেরিতে ওঠানো হবে না। ঘাটে থেকে খরচের টাকা শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় কী করব, বুঝতে পারছি না।’
খুলনাগামী ট্রাকচালক আলতাফ উদ্দিন বলেন, ‘ঢাকা থেকে মাছের খাবার নিয়ে চার দিন আগে ঘাটে এসেছি। গতবার ঘাটে বসেই ঈদ করেছি। এবারও মনে হয় ঘাটেই ঈদ করতে হবে। পরিবারের সঙ্গে সবাই ঈদ করবে, শুধু ট্রাকচালক ছাড়া। সব দুর্ভোগ আমাদের ওপর দিয়েই যাচ্ছে। বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে, খেয়ে না খেয়ে ঘাটে থাকতে হচ্ছে।’
শিমুলিয়া ঘাটের বিআইডব্লিউটিসির ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. আলীমুজ্জামন প্রথম আলোকে বলেন, যানবাহন পারাপারের জন্য ছোট-বড় ১৭টি ফেরি চলছে। সকাল থেকে যানবাহনের চাপ বাড়ছে। তবে পারাপারের অপেক্ষায় আছে অনেক যানবাহন। যেহেতু ঈদের তিন দিন আগ থেকে ট্রাক পারাপার নিষিদ্ধ, ঘাটে যেসব ট্রাক রয়েছে তা এখন পার করা হবে না। কাঁচা মালবাহী ট্রাক হলে সেটা বিবেচনা করা হবে।