সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত অনশনরত চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এই চার শিক্ষার্থী হলেন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের হাবিব, জাহিদ, সিরাত ও জাকারিয়া। তাঁদের মধ্যে হাবিব ও জাকারিয়াকে শাহজাদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বুধবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক ফারহানাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানান।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন, শাহজাদপুর পৌর এলাকার কান্দাপাড়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গোপনে প্রশাসনিক কার্যক্রম চলছে। শিক্ষার্থীদের একাংশ মিছিলসহ সেখানে গিয়ে আবার প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। প্রশাসনিক ভবনের দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত রোববার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ে চূড়ান্ত পরীক্ষা ছিল। তখন ১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে সোমবার রাতে নাজমুল হাসান নামের এক ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে দেন। এর পর থেকে তাঁদের প্রতিবাদ কর্মসূচি চলমান।
এ ঘটনায় রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফারহানা ইয়াসমিন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্যপদ থেকে লিখিতভাবে পদত্যাগ করেছেন। চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগটি তদন্তে রবীন্দ্র অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌসকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।