শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধ্যক্ষের কক্ষে তালা, সন্ধ্যায় সিদ্ধান্ত জানাবেন ছাত্রীরা

সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দরজায় বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন ছাত্রীরা
ছবি: সংগৃহীত

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনরত ছাত্রীরা। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রীরা হলের ওই দুই কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

আন্দোলনরত ছাত্রীরা জানিয়েছেন, আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় তাঁদের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হবে। এর মধ্যে তাঁদের ঘোষিত তিন দফা দাবি বাস্তবায়িত না হলে পরবর্তী কর্মসূচি দেওয়া হবে। দাবিগুলো হলো সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং অবিলম্বে ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগ।

সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষের কক্ষ (কক্ষ নম্বর ১০৭) ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের কক্ষে (কক্ষ নম্বর ১০৮) দরজায় বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছেন ছাত্রীরা। তবে আজ সকাল থেকে আন্দোলনরত কোনো শিক্ষার্থীদের উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে দেখা যায়নি। আন্দোলনরত একাধিক ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে তাঁদের তিন দফা দাবি না মানলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে। সন্ধ্যা সাতটার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

ছাত্রীদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলমগীর কবির আজ বেলা পৌনে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে উপাচার্য স্যার তাৎক্ষণিকভাবে ওয়াইফাই সমস্যা, খাবারের মানসহ যাবতীয় সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা দিয়েছেন। তাৎক্ষণিক সেসব সমাধান করা হয়েছে।

প্রাধ্যক্ষ কমিটির পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো মন্তব্য নেই। এ বিষয়ে উপাচার্য স্যার ছাত্রীদের গতকাল বলে দিয়েছেন।’

এর আগে গতকাল বিকেলে বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হয়। ছাত্রীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে যোবাইদা কনক খানকে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গতকাল প্রথম আলোকে বলেছিলেন, প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ অসুস্থতার কারণে ছুটিতে থাকায় হলে ভারপ্রাপ্ত প্রাধ্যক্ষ হিসেবে আরেকজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আর ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তাঁদের সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে সিরাজুন্নেসা হলের কয়েক শতাধিক ছাত্রী প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। পরে উপাচার্য গতকাল দুপুরে ছাত্রীদের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দিলে দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভ স্থগিত করে তাঁরা হলে ফেরেন। এরপর গতকাল দুপুর ১২টা থেকে আন্দোলনরত ছাত্রীদের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপাচার্য বৈঠক করেন।

বৈঠকে ছাত্রীদের প্রতিনিধিদল উপাচার্যের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ উত্থাপন করে তিন দফা দাবি তুলে ধরে। বৈঠক শেষে বেলা একটার দিকে উপাচার্য কার্যালয় থেকে বের হয়ে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি দাবি করে আবার ছাত্রীদের নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। পরে বিকেল চারটার দিকে ছাত্রীরা সংবাদ সম্মেলন করে দাবি মানতে আজ সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন।