মৌলভীবাজার

শহরজুড়ে তারের জঞ্জাল

বিদ্যুতের খুঁটিতে অন্ত্রের নাড়ির মতো জট পাকিয়ে আছে তার। তারগুলো কোন সংস্থার, কোন কাজের, সাধারণভাবে তা বোঝার উপায় নেই। যে যেভাবে পেরেছে, বাসা-অফিসে সেভাবে টেনে নিয়েছে তারের সংযোগ। কোথাও কোথাও তার ছিঁড়ে ফুটপাতের ওপর পড়েছে। মৌলভীবাজার শহরজুড়ে এখন তারের জঞ্জাল। নগরবাসীর আশঙ্কা, যেকোনো সময় শহরে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

স্থানীয় লোকজন ও পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরের এম সাইফুর রহমান সড়ক, কোর্ট রোড, শমশেরনগর সড়ক, পশ্চিম বাজার, শ্রীমঙ্গল সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সব কটি সড়কের পাশে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিতে তারের জঞ্জাল ঝুলছে। মূল সড়কের পাশে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাণিজ্যিক সংস্থার অফিস। সড়কের বিদ্যুতের খুঁটির মাধ্যমে এসব অফিসে ইন্টারনেট লাইন, কেব্‌ল লাইন, টেলিফোন সংযোগের তার টানা হয়েছে। আর অলিগলিতে ইন্টারনেটের তারের সঙ্গে আছে কেব্‌ল সংযোগের তার। ব্যস্ত এলাকাগুলোয় জালের মতো ঝোলানো অসংখ্য তার ও তারের কয়েল।

পৌরসভা সূত্র জানায়, সম্প্রতি এম সাইফুর রহমান সড়কে বিদ্যুতের পুরোনো খুঁটি অপসারণ করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে করে বাসাবাড়ি আর অফিসে ইন্টারনেট ও কেব্‌ল সংযোগের তার কাটা পড়ে। এসব সংযোগ পুনঃস্থাপনের জন্য মই লাগিয়ে কয়েক দিন ধরে তার লাগাতে দেখা গেছে বিভিন্ন সংস্থার কর্মীদের। ফলে পুনরায় আগের জঞ্জাল ফিরে এসেছে।

শহরের চৌমোহনা এলাকার ব্যবসায়ী রাজন আহমদ গতকাল শুক্রবার বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা যন্ত্রণায় আছি। প্রায়ই দোকানের সামনে ডিশ লাইন, ইন্টারনেটের তার ঝুলে থাকে। কারও চোখে-মুখে লাগে। অনেক সময় মাটিতে পড়ে থাকে। কারও পায়ে লাগে। বিভিন্ন সময় আমরা কোনো রকম এগুলো গুছিয়ে রাখি।’

কোর্ট রোডের বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, বিভিন্ন কোম্পানির তার বিশৃঙ্খল অবস্থায় ঝুলে আছে। দেখতেও অসুন্দর লাগে। বিভিন্ন সময় গাড়িতে লেগে তার ছিঁড়ে পড়ে। রিকশা, গাড়ির সামনে ঝুলে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে। তারগুলো শৃঙ্খলার মধ্যে আনা দরকার।

পৌরসভার মেয়র মো. ফজলুর রহমান বলেন, বিদ্যুতের প্রতিটি খুঁটিতে ইন্টারনেট ও কেব্‌ল সংযোগের তার আছে। তাঁরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জায়গায় ভূগর্ভস্থ সংযোগ দেওয়ার জন্য কথা বলেছেন।

পৌরসভা সূত্র আরও জানায়, সম্প্রতি জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সড়কের পাশে অপরিকল্পিতভাবে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন, তার ঝোলানো রোধে ভূগর্ভস্থ (আন্ডারগ্রাউন্ড) বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণের প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাবিবুল বাহার বলেন, বিউবোর অনুমতি ছাড়াই ইন্টারনেট ও কেব্‌ল সংযোগের তার বসানো হচ্ছে, ডিভাইস লাগানো হচ্ছে। এতে খুঁটিতে শর্টসার্কিট হয়েছে। ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।