নাটোর

শর্ষের তেলের দাম বাড়লেও মুখে হাসি নেই কৃষকের

ভোক্তা পর্যায়ে উৎপাদন মূল্যের চেয়ে প্রায় ৭০ টাকা বেশি দরে শর্ষের তেল বিক্রি হচ্ছে। এতে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা।

বাজারে শর্ষের তেলের দাম বেড়েছে। শহর ও গ্রামের হাটবাজারগুলোতে মানভেদে শর্ষের তেল প্রতি লিটার ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শর্ষের তেল বেশি দামে বিক্রি হলেও কৃষকেরা বাড়তি দাম পাচ্ছেন না। লাভের টাকা চলে যাচ্ছে ব্যবসায়ী ও মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। এ ঘটনায় কৃষকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

নাটোরের সিংড়ার শাহবাজপুর গ্রামের কৃষক আবু জায়েদ মণ্ডল এবার ১৩ বিঘা জমিতে শর্ষের আবাদ করেছিলেন। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে ৪ হাজার টাকা খরচ করে শর্ষে পান ৬ থেকে ৭ মণ। গত সপ্তাহে ব্যবসায়ীদের কাছে প্রতি কেজি শর্ষে ৮৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। বর্তমানে মিলমালিকেরা প্রতি কেজি কিনছেন ৯০ টাকা দরে। এতে প্রতি কেজি শর্ষের তেলের উৎপাদন খরচ দাঁড়াচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা। তাঁরা পাইকারি প্রতি লিটার বিক্রি করছেন ১৯০ থেকে ১৯৫ টাকা দরে। অথচ খুচরা বাজারে প্রতি লিটার শর্ষের তেল বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৮০ টাকা দরে।

নাটোরের ভোক্তা পর্যায়ে উৎপাদন মূল্য থেকে প্রায় ৭০ টাকা বেশি দরে শর্ষের তেল বিক্রি হচ্ছে। কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মধ্যস্বত্বভোগীদের অধিক হারে মুনাফা লাভের কারণে খুচরা বাজারে ভোক্তাদের অস্বাভাবিক বেশি দরে তেল কিনতে হচ্ছে। জেলা প্রশাসন যথাযথভাবে বাজার তদারকি না করায় ভোক্তাদের বেশি দাম দিয়ে শর্ষের তেল কিনতে হচ্ছে।

নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদিউল ইসলাম বলেন, সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এবার শর্ষের তেলের দাম কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় শর্ষের তেলের চাহিদা বেড়েছে। তাই দামও বেড়েছে। এতে কৃষকেরা আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে যেমন অধিক লাভবান হয়েছে। তাঁদের চেয়েও লাভবান হয়েছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। এ জন্য উৎপাদন পর্যায় থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো দরকার।

এ বিষয়ে নাটোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মেহেদিউল ইসলাম বলেন, এবার ভালো আবহাওয়া ও রোগবালাই না থাকায় শর্ষের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এবার শর্ষের তেলের দাম কম হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সয়াবিন তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় শর্ষের তেলের চাহিদা বেড়েছে। তাই দামও বেড়েছে। শর্ষের তেলের দাম বাড়ায় লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। এ জন্য উৎপাদন পর্যায় থেকে খুচরা বাজার পর্যায়ে তদারকি বাড়ানো দরকার।

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে শর্ষের উৎপাদন খরচের তুলনায় বাজারে শর্ষের তেলের দাম অনেক চড়া। বাজারে শর্ষের তেলের দাম বাড়লেও শর্ষে চাষ করে বেশি লাভবান হতে পারছেন না কৃষকেরা।