কলেজছাত্রীর করা ধর্ষণ মামলায় মাসুদ ব্যাপারী (৩১) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তিনি শরীয়তপুরের জাজিরা পৌরসভার সাবেক মেয়র ইউনুছ ব্যাপারীর ছেলে। আজ বুধবার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক আবদুস সালাম খান এ রায় দেন।
ওই মামলার আরেক আসামি শরীফ সরদারকে (২১) মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর আদালত থেকে তাঁদের কারাগারে নিয়ে যাওয়ার পথে আসামি মাসুদ ব্যাপারী চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘রায় মানি না। আমার ওপর অন্যায় করা হচ্ছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’
২০১৯ সালের ২৯ জুন জাজিরার দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন। এই ছাত্রী বর্তমানে আইন বিষয়ে স্নাতক শ্রেণিতে পড়ছেন।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জাজিরার ওই কলেজছাত্রী ২০১৯ সালে পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। সেখানে একজন মেয়েটিকে উত্ত্যক্ত করতেন। মেয়েটি মাসুদ ব্যাপারীকে বিষয়টি জানায়। ঘটনার সুরাহা করে দেওয়ার কথা বলে ওই বছরের ২৯ জুন মেয়েটিকে ধর্ষণ করা হয়। ওই কলেজছাত্রী মাসুদ ও তাঁর সহযোগী শরীফকে আসামি করে জাজিরা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা করে।
গ্রেপ্তারের ছয় দিনের মাথায় আসামি মাসুদকে আদালত জামিন দিলে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন আন্দোলন করে। এর তিন দিনের মাথায় তাঁর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়। ২০১৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আদালতের বারান্দায় স্বজনদের নিয়ে রায় শোনার অপেক্ষায় ছিলেন ওই ছাত্রী। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাসুদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়ায় স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু যাঁকে কেন্দ্র করে ও যিনি ধর্ষণ করতে মাসুদকে সহায়তা করেছেন, সেই শরীফ খালাস পেলেন। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাঝুঁকিতে পড়ে গেলাম। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
বাদীপক্ষের আইনজীবী আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রায়ের এক অংশে ভুক্তভোগী স্বস্তি পেয়েছেন। আর একজন খালাস পাওয়ায় বাদী ও তাঁর পরিবার শঙ্কিত। রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব।’
শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি মীর্জা হজরত আলী প্রথম আলোকে বলেন, রায়ে কোনো পক্ষ সংক্ষুব্ধ হলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারবেন।