শরীয়তপুর সদর উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করা হয়েছে। ১০ অক্টোবর আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড থেকে ইতালিপ্রবাসী শাহ আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। তাঁর নাম ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিযোগও করা হয়। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পরিবর্তন করে মাহমুদপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লিয়াকত হোসেনকে নতুন করে মনোনয়ন দেওয়া হয়। শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মস্তফা বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই মনোনয়নের বিরোধিতা শুরু করেন। তাঁরা এই মনোনয়ন প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিযোগ করা হয়।
গোলাম মস্তফা বলেন, শাহ আলমের নাম তৃণমূল থেকে প্রস্তাব করা হয়নি। তারপরও তিনি কীভাবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন, সেটি জানা নেই। তবে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিযোগ পাঠানোর পর মনোনয়ন পরিবর্তন করা হয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, আগামী ১১ নভেম্বর শরীয়তপুর সদরের ১০টি ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ৩ অক্টোবর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভা থেকে তৃণমূলের প্রার্থীদের নামের তালিকা কেন্দ্রীয় দপ্তরে পাঠানো হয়। ওই তালিকায় চেয়ারম্যান পদে শাহ আলমের নাম ছিল না। এরপর ১০ অক্টোবর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশ করলে দেখা যায় মাহমুদপুর ইউনিয়নে শাহ আলমকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এর পর থেকেই তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই মনোনয়নের বিরোধিতা শুরু করেন। তাঁরা এই মনোনয়ন প্রত্যাহারেরও দাবি জানান। পরে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ থেকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অভিযোগ করা হয়। এরপরই মনোনয়ন পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান শাজাহান ঢালী বলেন, ‘শাহ আলম প্রবাসী। তিনি কোনো দলীয় পদে নেই। তারপরও তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ায় আমরা বিরোধীতা করেছি। আমিও মনোনয়ন চেয়েছিলাম। কিন্তু দল থেকে নতুন একজনকে দেওয়া হয়েছে।’
শাহ আলমের এক আত্মীয় প্রথম আলোকে বলেন, দু-এক দিনের মধ্যেই শাহ আলমের দেশে আসার কথা রয়েছে। তাঁর মনোনয়ন বাতিলের সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়নি। তিনি সব সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, আর্থিক অনুদান দিয়ে থাকেন।
শাহ আলম বর্তমানে ইতালিতে অবস্থান করায় তাঁর এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০১৬ সালের নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। ওই নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরপরই তিনি ইতালিতে চলে যান। এরপর আর তিনি দেশে ফিরে আসেননি।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের রাজনীতি করছি। দল মূল্যায়ন করে আমাকে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন দিয়েছে। আশা করছি, বিপুল ভোটে বিজয়ী হব।’