লালখান বাজারে সংঘর্ষ, ধাওয়া, বিস্ফোরণ

লালখান বাজার এলাকায় সংঘর্ষে পুলিশের তৎপরতা।
ছবি: জুয়েল শীল

চট্টগ্রাম সিটির ১৪ নম্বর লালখান বাজার ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে আজ বুধবার সকাল থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষ চলেছে। এতে আহত হন কমপক্ষে ২০ জন। সকালে লালখান বাজার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে।

ওই ওয়ার্ডের তুলাপুকুরপাড় ও মতিঝর্ণায় ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত লালখান বাজার হাই লেভেল রোড, তুলাপুকুর লেন এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে।

লালখান বাজারে সংঘর্ষে আহত একজনকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সকালে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম মাসুমকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বলেন, ‘আমাকে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আমি নৌকার জন্য কাজ করছি।’ তবে তাঁর বিরুদ্ধে দল থেকে মনোনীত কাউন্সিলর প্রার্থীর বিরুদ্ধে কাজ করার অভিযোগ রয়েছে।

ওই ওয়ার্ডের কয়েকটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী আবুল হাসনাত বেলালের অনুসারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বিদায়ী কাউন্সিলর এ এফ কবির মানিকের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। লালখান বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউসেফ স্কুল ও শহীদনগর সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলেছে। এই ওয়ার্ডের বেশির ভাগ কেন্দ্রে বিএনপি মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর এজেন্ট নেই। বিদ্রোহী প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দেওয়া অভিযোগ রয়েছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁকা গুলি ছুড়ে পুলিশ।

লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রিপন দাশ প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রের বাইরে ঝামেলা হয়েছে। ভেতরে সব ঠিক আছে। ভোট গ্রহণ বন্ধ হয়নি।

গতকাল মঙ্গলবার রাতে লালখান বাজার তুলাপুকুরপাড় এলাকার একটি কলোনিতে অভিযান চালিয়ে কিরিচ ও লোহার রড উদ্ধার করেছে খুলশী থানার পুলিশ। রাতে মতিঝর্ণা এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ ও ফাঁকা গুলি শব্দ শুনেছেন স্থানীয় লোকজন। এতে সকালে ভোট দিতে যাওয়ার সময় অনেকে আতঙ্কে থাকেন।
মতিঝর্ণা এলাকার বাসিন্দা মফিজুর রহমান বলেন, ‘গোলাগুলি, মারামারি এখানকার নিত্য চিত্র। ভোটের দিন হবে না, তা কি হয়।’

খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনুজ্জামান রাতে কিরিচ, লোহার রড উদ্ধারের বিষয়টি জানিয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে বলে তিনি জানান।

লালখান বাজার ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী শাহ আলমকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নগর বিএনপির সদস্যসচিব আবুল হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, লালখান বাজারে বিএনপির কোনো নেতা–কর্মী দাঁড়াতে পারছেন না। এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয় সকালে।

গোলাগুলি, মারামারি এখানকার নিত্য চিত্র। ভোটের দিন হবে না, তা কি হয়।
মতিঝর্ণা এলাকার বাসিন্দা মফিজুর রহমান

পাহাড়তলী, লালখান বাজার ওয়ার্ড ছাড়াও বাকলিয়া, জামাল খানসহ কয়েকটি ওয়ার্ডে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২৭ জন আহত হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। আজ বেলা ১১টার দিকে জামাল খান ওয়ার্ডের ডা. খাস্তগীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হলে পুলিশ একটি ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।