বান্দরবানের লামায় হামে আক্রান্ত ম্রো সম্প্রদায়ের ৩৩ সদস্যকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবার বাড়ি সদর ইউনিয়নের দুর্গম পুরোনো লাইল্যাপাড়ায়। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশুরা রয়েছে।
আজ সোমবার এই ৩৩ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এর আগে গত শুক্রবার পুরোনো লাইল্যাপাড়ায় হামে আক্রান্ত হয়ে চার মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার পাড়াটির অবস্থান।
লামা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, তিনি কয়েকজনকে নিয়ে পুরোনো লাইল্যাপাড়ায় যান। সেখানে দেখতে পান বিনা চিকিৎসায় হামে আক্রান্তরা পড়ে আছেন। আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খুঁজে বের করা হয়। এরপর নারী, শিশুসহ ৩৭ জনকে উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়। তবে চারজন মোটামুটি সুষ্ঠু থাকায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি। আক্রান্তদের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী ১৪টি শিশু রয়েছে।
চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, হামে আক্রান্তদের উদ্ধার করে হাসপাতালে আনতে সেনাবাহিনীর একটি দল সহযোগিতা করেছে।
পুরোনো লাইল্যাপাড়ার বাসিন্দা লংফং ম্রোসহ কয়েকজন বলেন, গতকাল রোববার সন্ধ্যায় একজন উপসহকারী চিকিৎসা কর্মকর্তাসহ একটি মেডিকেল টিম তাঁদের পাড়ায় গিয়ে কিছু ওষুধপথ্য দিয়ে ফিরে গেছেন। তাঁদের অভিযোগ, তাঁদের পাড়ায় এ পর্যন্ত একবারও কাউকে হাম-রুবেলার টিকা দেওয়া হয়নি। এ টিকা সম্পর্কে তাঁরা জানেনও না।
পুরোনো লাইল্যাপাড়ার কার্বারি (পাড়াপ্রধান) লুংতু ম্রো বলেন, তাঁর পাড়ায় ১৫টি পরিবারের ৮২ জন সদস্যের মধ্যে হামে আক্রান্ত কেউ কেউ সুষ্ঠু হয়েছেন। সুষ্ঠু হওয়া ব্যক্তিরাসহ পাড়ায় এখন ৪৫ জন রয়েছে। কেউ আক্রান্ত হলে তাদের হাসপাতালে নেওয়া হবে। লুংতু ম্রো বলেন, প্রায় দুই সপ্তাহ আগ থেকে পাড়াবাসী হামে আক্রান্ত হচ্ছেন। এত দিন তাঁরা কোনো চিকিৎসা ছাড়া পড়ে ছিলেন। বিনা চিকিৎসায় গত শুক্রবার তাঁর চার মাসের নাতি দুতিয়া ম্রোর মৃত্যু হয়।
বান্দরবানের সিভিল সার্জন অংসুইপ্রু মারমা জানান, লামা স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভর্তি হওয়া পুরোনো লাইল্যাপাড়া ম্রোদের হামের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের রক্তের নমুনা পরীক্ষার জন্য ঢাকার মহাখালীতে পাঠানো হবে। হাম-রুবেলা টিকা ওই পাড়ায় না দেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।