লকডাউনে মানুষ ঘর থেকে বের হবে না, প্রতিবেশীরাও জানবে না—এই ভেবে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক মাদ্রাসাছাত্রীর (১৪) বাল্যবিবাহের আয়োজন করেছিল পরিবার। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। প্রশাসনের তৎপরতায় বিয়েতো পণ্ড হলোই, বাড়তি জরিমানাও গুনতে হলো বর ও কনের পরিবারকে।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার একটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের ওই ছাত্রীর সঙ্গে একই ইউনিয়নের রঘুরামপুর গ্রামের এক যুবকের (২৪) গত বুধবার সন্ধ্যায় বিয়ের আয়োজন করা হয়। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে প্রতিবেশীদের কাউকে না জানিয়ে অনাড়ম্বরভাবেই চলছিল বিয়ের আয়োজন। কিন্তু স্থানীয় এক যুবক বিষয়টি কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল রানাকে মুঠোফোনে জানান। ইউএনও সঙ্গে সঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অমিত রায় এবং উপজেলা মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তা পপি রানী তালুকদারকে বিবাহটি বন্ধ করতে নির্দেশ দেন। ওই কর্মকর্তারা পুলিশ নিয়ে বিয়েবাড়িতে হাজির হন। এ সময় প্রশাসনের উপস্থিতি টের পেয়ে কনের বাড়ির লোকজন এবং বরসহ সঙ্গে আসা লোকজন সটকে পড়েন।
বাড়িতে শুধু থেকে যান কনের বড় ভাইয়ের স্ত্রী আর বরের সঙ্গে আসা এক আত্মীয়। পরে সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো হয়। অবশ্য আদালতের কাছে উভয় পক্ষের লোকজন হাজির হন এবং নিজেদের দোষ স্বীকার করেন। এ সময় বিচারক অমিত রায় বরের বাবা এবং কনের বাবাকে জরিমানা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহেল রানা বলেন, বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭–এর অধীন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বরের বাবাকে ১৫ হাজার ও কনের বাবাকে ১১ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে মুচলেকা আদায় করা হয়েছে।